পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছাত্র আন্দোলন

মত আমাদের শক্তিকে উন্মুখ করিয়া তুলিবে। সে আদর্শ হইতেছে স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীনতার অর্থ সকলে এক বুঝেন না; আমাদের দেশেও স্বাধীনতার অর্থের একটা ক্রম পরিবর্ত্তন হইতেছে। স্বাধীনতা বলিতে আমি বুঝি সমাজ ও ব্যক্তি, নর ও নারী, ধনী ও দরিদ্র সকলের জন্য স্বাধীনতা, ইহা শুধু রাষ্ট্রীয় বন্ধন-মুক্তি নহে, ইহা অর্থের সমানবিভাগ, জাতিভেদ ও সামাজিক অবিচারের নিরাকরণ ও সাম্প্রদায়িক সংকীর্ণতা ও গোঁড়ামি বর্জ্জনও সূচিত করে। এই আদর্শকে অবিবেচকেরা হয়ত অসম্ভব বলিবে—কিন্তু প্রাণের ক্ষুধাকে একমাত্র ইহাই শান্ত করিতে পারে।

 জাতীয় জীবনের যত দিক দিয়া প্রকাশ হইতে পারে স্বাধীনতার আংশিক রূপ ততগুলিই। কেহ কেহ স্বাধীনতা বলিতে স্বাধীনতার একটী বিশেষ দিকের কথাই বুঝেন। স্বাধীনতার এই সঙ্কীর্ণ সংজ্ঞাটাকে কাটাইয়া উঠিয়া ব্যাপক অর্থটী গ্রহণ করিতে আমাদের বহু বৎসর লাগিয়াছে। যদি স্বার্থের মুখ না চাহিয়া স্বাধীনতার জন্যই স্বাধীনতাকে আমরা ভালবাসিতে চাই, তাহা হইলে একথা বুঝিবার সময় আসিয়াছে যে, সত্যকার স্বাধীনতার অর্থ কেবল মাত্র ব্যক্তির জন্য নয়, সমগ্র সমাজের জন্যও সকল প্রকার বন্ধন হইতে মুক্তি। এযুগের আদর্শ তাহাই—সম্পূর্ণভাবে মুক্ত ভারতবর্ষের ধ্যানমূর্ত্তিই আমার হৃদয়কে অধিকার করিয়া রহিয়াছে।

 স্বাধীনতা অর্জ্জনের একমাত্র উপায় হইতেছে স্বাধীন ব্যক্তির

৪৯