পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

বুকে সৃষ্টির অবিরাম তাণ্ডব নৃত্য। ধ্বংস ও সৃষ্টি লীলার মধ্যে যে আত্মহারা হইতে পারে একমাত্র সেই ব্যক্তিই তরুণ। তারুণ্য যার আছে সে, ধ্বংস ও সংগ্রামের ছায়া দর্শনে ভীত হয় না অথবা নব-সৃষ্টিরূপ কার্য্যে অপারগ হয় না। বৃদ্ধ হইয়াও মানুষ তরুণ হইতে পারে যদি তার প্রাণ সবুজ থাকে আর তরুণ হইয়াও মানুষ বৃদ্ধ হইতে পারে যদি তার অবস্থা হয় “বৃদ্ধত্বম্ জরসা বিনা।”

 বহুদিন যাবৎ তরুণশক্তি আত্মবিস্মৃত ছিল, তাই কলুর বলদের মত সে পরের কশাঘাত খাইয়া পরের নির্দ্দিষ্ট পথে চলিয়াছে— এবং দায়িত্বভার অপরের হাতে তুলিয়া দিয়া অন্ধের মত কাজ করিয়া আসিয়াছে। যতদিন পর্য্যন্ত এরূপ অবস্থায় সমাজের ও জাতীয় ক্রমিক উন্নতি ঘটিয়াছে, ততদিন পর্য্যন্ত বিশেষ কোন গোলমাল সৃষ্টি হয় নাই; কিন্তু যে দেশে বা যে যুগে নেতৃবর্গের অযোগ্যতার জন্য সমাজের ও জাতির দুর্গতি ঘটিয়াছে সেখানে তরুণসম্প্রদায় বিদ্রোহী হইয়াছে। সুলতানের হাতে সমস্ত শক্তি ও কর্ত্তব্যভার অর্পণ করিয়া তুর্কি জাতি যখন ক্রমশঃ অধোগতির মুখে চলিতে লাগিল, তখন বিদ্রোহী তুর্কি-তরুণেরা নব্য তুর্কিদলের প্রতিষ্ঠা করে। সম্রাট কাইজার ও তাঁহার পারিষদ্‌বর্গ যখন সেনাপতিকুলের হস্তে সমস্ত দায়িত্ব তুলিয়া দিল, তরুণ জার্ম্মাণী তখন নিশ্চিন্ত হইতে পারিল না—বিশেষ করিয়া যখন তরুণ জার্ম্মাণেরা

৭৮