পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী
১৩৫

বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের দৃঢ় আসন টলায়মান হইয়া পড়িয়াছে; ফলে আমাদের উদ্দেশ্য পূর্ব্বাপেক্ষা অনেক সহজেই সাফল্যমণ্ডিত হইবে। প্রথমতঃ আমাদের দেশবাসীর অন্তরে এই বিশ্বাস জন্মাইয়া দিতে হইবে যে, একদিন তাহারা স্বাধীনতা সংগ্রামে জয়লাভ করিবেই। দ্বিতীয়ত, ভারতের বাহির হইতে তাহাদের সামরিক সাহায্য প্রদান করিতে হইবে। প্রথম উদ্দেশ্য সাধন করিতে হইলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধের পরিস্থিতি বুঝিতে হইবে এবং তাহা হইতেই যুদ্ধের ফলাফল জানা যাইবে। দ্বিতীয় কাজ করিতে হইলে ভারতের বাহিরের ভারতীয়রা তাহাদের স্বদেশবাসীদিগকে কিভাবে সাহায্য করিতে পারে এবং প্রয়োজন হইলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের শত্রুদের কাছ হইতেও কি সাহায্য লাভ করা সম্ভব, তাহা জানিতে হইবে। বন্ধুগণ! আমি এখন আপনাদিগকে বলিতে পারি যে, এই উভয় উদ্দেশ্যই পূর্ণ হইবে। বিদেশে ঘুরিয়া আমি সমস্ত অবস্থা দেখিয়াছি এবং যুদ্ধরত শক্তিগুলির অবস্থা জানিয়াছি। ইঙ্গমার্কিণ সাম্রাজ্যবাদ পরাজিত হইবে—ইহা বুঝিয়াই তাহা দেশে আমার স্বদেশবাসীদিগকে জানাইয়াছি। এক্সিস শক্তিরাও ভারত স্বাধীনতা লাভ করুক ইহা চাহে এবং যদি ভারতীয় জনগণ আবশ্যক বোধ করে, তবে তাহারা তাহাদের শক্তি অনুযায়ী সাহায্য করিতে প্রস্তুতও আছে। বিদেশে ভারতীয় এমন কোন নরনারী নাই, যিনি ভারতের স্বাধীনতা চাহেন না এবং জাতীয় সংগ্রামে সাহায্য করিতে প্রস্তুত নহেন। প্রচুর প্রমাণ সহ আমি বলিতে পারি যে, আমাদের দেশবাসীদের অদ্যকার এই পৃথিবীতে এক্সিস শক্তিই আমাদের বন্ধু। আমার দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে আমি কিছু করিতে পারি—একথা আমার শত্রুরাও বলিবে না। যদি ব্রিটিশ সরকার আমার নৈতিক শক্তি নষ্ট করিতে না পারিয়া