পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী
১৫৭

সব গ্রেপ্তার হওয়া সত্ত্বেও এই দুই মহকুমার সর্বত্র প্রতি গ্রামে অসংখ্য সভা ও শোভাযাত্রা হয়। কয়েক দিনেই আনুমানিক ষোল হাজার লোক স্বেচ্ছাসেবক শ্রেণীভুক্ত হয়। সংগঠনের উদ্দেশ্যে প্রতি ইউনিয়নে শিবির স্থাপন হয়। সমস্ত স্কুল বন্ধ হইয়া যায়। ছাত্ররা দলে দলে স্বেচ্ছাসেবক হয়। অনেক শিক্ষক ও কর্ম্মত্যাগ করেন। যুদ্ধ তহবিলে টাকা দেওয়া বন্ধ হইল। কাঁথি বাজারে নিত্য ব্যবহার্য্য দ্রব্য বিক্রয় বন্ধ হইল। ফলে তিন সপ্তাহ সহর জন শূন্য হইল। সরকারী কর্ম্মচারীদের দুর্দ্দশার চরম হইল। আদালত সম্পূর্ণভাবে বর্জ্জিত হইল। কেহই মামলা করিতে আসিল না। বহু চৌকিদার ও দফাদার স্বেচ্ছায় চাকুরিতে ইস্তাফা দিয়া এই আন্দোলন পরিচালনা করিবার জন্য সমর পরিষদ গঠিত হয়।

 ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ প্রচণ্ড আকার ধারণ করিবার পর জনসাধারণের নামে শাসন ব্যবস্থা প্রবর্ত্তিত হয়। সমর পরিষদগুলি কিছুদিন পর্য্যন্ত আন্দালন পরিচালনা করিয়াছিল। কিন্তু সরকারী প্রতিষ্ঠান সমূহ আংশিকভাবে কিম্বা সম্পূর্ণরূপে অচল হইবার পর কোন না কোন নামে জাতীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠিত হয়। কাঁথি মহকুমায় পটাসপুর এবং খেজুরী থানায় প্রায় এক মাস পর্য্যন্ত সরকারী কর্ত্তৃত্বের কোনরূপ চিহ্ন ছিল না। এবং এই দুইটি থানায় পূর্ণ কর্ত্তৃত্বশীল জাতীয় গবর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। এতদ্ব্যতীত রামনগর এবং ভগবানপুর থানাতেও জাতীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। জাতীয় গবর্ণমেণ্টের কর্তা হিসাবে একজন সভাপতি অথবা ডিক্টেটর থাকিতেন। সভাপতি অথবা ডিক্টেটরের অধীন একটি মন্ত্রণা পরিষদ অথবা মন্ত্রিসভা থাকিত। মন্ত্রীদের অধীনে স্বরাজ বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, বিচার বিভাগ প্রভৃতি দপ্তর থাকিত।

 ১১