পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৮
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী

 জাতীয় গবর্ণমেণ্টের শাসনাধীন সমগ্র অঞ্চল (থানা) কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এলাকায় বিভক্ত করা হইয়াছিল। এই সমস্ত এলাকায় জনসাধারণ কর্ত্তৃক নির্ব্বাচিত পঞ্চায়েৎ বোর্ড শাসনকার্য্য নির্ব্বাহ করিত। এখানেও নিদারুণ অত্যাচার আরম্ভ হইল। সেই অত্যাচারের বিস্তৃত বিবরণ এই ক্ষুদ্র পুস্তকে দেওয়া সম্ভব নয়। মোটামুটি কাঁথির ক্ষতির হিসাব দেওয়া গেল:—গুলিতে মৃত্যু—৩৯, গুলিতে আহত— ১৭৫, নারীধর্ষণ পুলিশ বা মিলিটারি দ্বারা—২২৮, গৃহদাহ—৯৬৫, গৃহদাহে ক্ষতি—৫॥৹ লক্ষ টাকা, গ্রেপ্তারের সংখ্যা—১২,৬৮১, দণ্ডিতের সংখ্যা-৬৭২, লুষ্ঠিত গৃহের সংখ্যা-২০৫৯, লুঠতরাজের (পুলিশ দ্বারা ক্ষতির পরিমাণ ৩॥৹লক্ষ টাকা, লাঠিতে আহত—৬৬৮৫, পাইকারী জরিমানা ৩০০০০৲ টাকা। একজন অফিসার দিনে দুর্ভিক্ষ পীড়িতদের সাহায্য করিতেন। রাত্রে সৈন্যদের সাহায্যে জনসাধরণের গৃহে হানা দিতেন। প্রভাতকুমার কলেজের মাসিক আড়াই শত টাকা সাহায্য বন্ধ করিয়া দেওয়া হয়। বিনানুমতিতে বাস চালান বন্ধ হয়। সমগ্র মহকুমায় পাঁচ শত সৈন্য মোতায়েন হয়। পুলিশ ও মিলিটারির কার্য্যকলাপের যাহাতে ফটো না লওয়া হয় সেজন্য গভর্নমেণ্ট যে-সামরিক লোক ও ব্যবসায়ীদের নিকট ক্যামেরা কাড়িয়া লয়। আর সকলের কাছ থেকে বন্দুকও কাড়িয়া লওয়া হয়। ১৯৪২ সালে জুন মাসে বঞ্চনা নীতি কার্যকরী করার সময় সমস্ত সাইকেল ও নৌকা অপসারণ করা হয়। খেজুরী থানায় লোকদিগের মনোবল দমন করিবার জন্য ভদ্রলোকগণকে চৌকিদারী ট্যাক্স দিবার ছল করিয়া তাকাইয়া আনিয়া ভয় দেখাইয়া পূর্ব্ব চিহ্নিত পাঁচ গজ স্থানে নাক খত দেওয়ান হয়। তা’ছাড়া বহুলোককে বেত্রাঘাত, মারপিট করা হয়, বিনা বিচারে বহুলোককে আটক রাখা হয়।