পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ডাকছে—আটত্রিশ কোটি আশীলক্ষ দেশবাসী আমাদের ডাকছে—আত্মীয়েরা ডাকছে আত্মীয়দের; ওঠ, নষ্ট করবার মত সময় আমাদের নাই, অস্ত্র হাতে লও! সম্মুখে আমাদের বিস্তীর্ণ পথ—ঐ পথ তৈরী করে গেছেন আমাদের পথপ্রদশকগণ! সে পথ ধরেই আমরা এগিয়ে যাবো, পথ করে নেবো শত্রু-সেনার মধ্য দিয়ে। ভগবান যদি চান আমরা শহীদের ন্যায় মৃত্যুবরণ করবো; যে পথ দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনী দিল্লী পৌঁছুবে, মৃত্যুর পূর্বে আমরা একবার সে পথ চুম্বন করে নেবো। দিল্লীর পথ স্বাধীনতার পথ—চলো দিল্লী। জয় হিন্দ্।


 আজাদ হিন্দ গভর্নমেণ্ট স্থাপন হবার সঙ্গে সঙ্গে জাপান, জার্মাণী, ইটালী, স্পেন, শ্যাম, আয়র্ল্যাণ্ড প্রভৃতি সমস্ত স্বাধীন রাজ্য এই গভর্ণমেণ্টকে স্বীকার করে নিয়েছিল। নেতাজী জাপানে, জার্মাণীতে—সর্বত্রই স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিনায়ক হিসাবেই সম্মানিত হয়েছিলেন। পরাধীন ভারতবর্ষের পক্ষে এ এক অভাবনীয় গৌববের বস্তু। স্বাধীন রাষ্ট্রের মত আজাদ হিন্দেরও বেতার কেন্দ্র ছিল। এবং আজ আর স্বীকার করতে বাধা নেই যে সেই সময় দিনের পর দিন, রাতের পর রাত, ভারতের ঘরে ঘরে ভারতবাসীরা কান পেতে তাদের হৃদয়ের সমস্ত আগ্রহ দিয়ে সেই বেতারকেন্দ্রের খবর এবং নেতাজী ও অন্যান্য সমর নায়কদের বাণী শ্রবণ করতো এবং আশার ও আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে উঠতো। যে স্বাধীনতার স্বাদ তারা পায় নি, তাদেরই দেশের ভাইবোনেরা অন্যত্র সে স্বাদ ভোগ করছে এবং সেই স্বাদের অংশ সমস্ত ভারতকে দেবার জন্য প্রাণপণ করে সংগ্রাম চালাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীর বিরুদ্ধে সুদূরের সেই সংবাদ পেয়ে ভারতের শৃঙ্খলিত নর-নারীর দল মনের মধ্যে অদ্ভুত এক উত্তেজনা বোধ করতো। সে সব দিন আজ স্বপ্নের মত জ্বল জ্বল করে।

 আই, এন, এ বিচারের সময়ে এবং পূর্বে আমাদের আলোচনার মধ্যে আমরা দেখেছি যে যতই এই গভণমেণ্টকে জাপানের দাস বলা হোক না কেন, আসলে

১০৩