পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এই গান ছাড়া বন্দেমাতরম্ গান এবং জনগণ মন অধিনায়ক...এই গানের হিন্দী অনুবাদেরও খুব প্রচলন হয়েছিল। বেতার কেন্দ্রের প্রত্যেক অনুষ্ঠানের আগে বন্দেমাতরম্ গানের রেকর্ড বাজানো হত। এই রেকর্ড বাঙ্গালী গায়ক ভবানী দাসের। আর একখানি সুমধুর গান সৈন্যদের মুখে মুখে ফিরতো সেটির প্রথম কলি হল ‘দিলী দিল্লী যায়েঙ্গে’···। আজকের দিনে এই সব সঙ্গীত আবার নতুন করে আমাদের উদ্দীপনার সৃষ্টি করবে, আমাদের রক্তকে উচ্ছল করে তুলবে। বিশেষ করে ‘কদম্ কদম্ বাড়ায়ে যা’ গানটি ইতিমধ্যেই অন্যতম প্রধান জাতীয় সঙ্গীত হয়ে উঠেছে। বন্দেমাতরমের মত এ গানটিও প্রত্যেক ভারতবাসী অভ্যাস করা উচিত।

 জাতীয় সঙ্গীত, দৈনিক প্রচারপত্র, বেতার সহযোগে প্রচার, সংবাদপত্র মারফৎ প্রচার এই সব উৎস থেকে সৈনিকেরা উৎসাহিত হত সন্দেহ নেই কিন্তু সর্বোপরি নেতাজীর দৈনিক নির্দেশনামাই সেই প্রচণ্ড বিপ্লব বহ্নিতে ইন্ধন যোগাতো। সেই নির্দেশনামার কিছু কিছু পাঠ না করলে আমাদের জ্ঞান অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। তাই সেই নির্দেশনামার কিছু কিছু পরিভাষা নীচে দেওয়া হল:

 বন্ধুগণ! ১৮৫৭ সালের পর এই প্রথমবার আমরা স্বীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠ করলাম। বিদেশের বহু শক্তিশালী রাষ্ট্র এ গভর্ণমেণ্টকে স্বীকার করে নিয়েছে। ১৮৫৭ সালের পর এই প্রথবার ভারতেব বাইরের বিশেষতঃ এশিয়ার ও ইউরোপের ভারতীয়েরা স্বদেশের স্বাধীনতার যোদ্ধাদের পাশাপাশি দাঁড়িয়েছে। ভারতে বিপ্লবের ভিত্তিভূমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অত্যাচারীর নির্দয় শোষণের ফলে ভারতে দুর্ভিক্ষ ও অনাহারের তাণ্ডবলীলা চলেছে, তাই ভারতবাসিগণকে বিপ্লবের পরে ঠেলে দিচ্ছে। ভারতের স্বাধীনতার শেষ সংগ্রাম আরম্ভ করবার উপযোগী সময় আজ উপস্থিত। স্বদেশে ও বিদেশে অবস্থিত আমার দেশবাসিগণ আর সময় নষ্ট কোর না! তোমরা প্রস্তুত হও এবং এই মূহুর্তেই শেষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হও। পূর্ব এশিয়ার শক্তিশালী মিত্র রাষ্ট্রের সাহায্য নিয়ে আমরা

১০৯