পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ১৯৪৪ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারী প্রথম বৃটিশ বাহিনীর সঙ্ঘে আজাদ-হিন্দ-ফৌজের সঙ্ঘর্ষ শুরু হয়। বৃটিশ বাহিনী আধুনিকতম সব রকম সমর সজ্জায় সজ্জিত থাকলেও এবং প্রচুর সমরোপকরণ মজুত থাকলেও আজাদ-হিন্দ-সেনা বাহিনী একমাত্র হাতিয়ার সম্বল করেই অমিত বিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকে এবং পর পর কযেকটা যুদ্ধক্ষেত্রে বৃটিশকে পরাজিত করে পিছনে হটিয়ে দেয়। শোনা যায় সামনাসামনি যুদ্ধ করতে গেলে বৃটিশ সৈনিকদের কাছে আজাদী সেনারা রীতিমত আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিল। সেই জন্য সামনাসামনি যুদ্ধের ওপর জোর না দিয়ে অতর্কিতে আক্রমণ করে এবং অলক্ষ্যিতে বিমান থেকে অজস্র বোমা বর্ষণ করে বৃটিশ বাহিনী আজাদী সেনাদের কাবু করতে চেষ্টা করতে থাকে। একে ত মাল মসলার অভাব, তার ওপর মোটর যানের অভাবে পায়ে হেঁটে পাহাড়-নদী-জঙ্গল অতিক্রম করে, জল-ঝড়-রোদ নীরবে মাথা পেতে নিয়ে, অর্ধাশন অনশন সহ্য করে তাদের অগ্রসর হতে হচ্ছিল তার ওপর বৃটিশের বিশেষ করে আমেরিকানদের এই অজস্র বোমাবর্ষণের ফলে আজাদী সেনারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

 ওদের অধীনে সমপরিমাণ বিমানপোত যদি থাকতো তাহলে যুদ্ধের ফলাফল কি যে দাঁড়াতো বলা যায় না। একমাত্র অর্থাভাবের জন্যই তারা এই বিমান সংগ্রহ করতে পারে নি। কিন্তু তবু এই অবস্থাতেই এমন একদিন এসেছিল যে দিন আজাদ হিন্দ সেনা ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পেরেছিল। মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ হলেন সেই ভাগ্যবান পুরুষ যিনি সর্বপ্রথম অধিকৃত ভারতভূমিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ভারতের মুক্তি সংগ্রামের শ্রেষ্ঠ সম্মান তিনিই প্রথম অর্জন করলেন।

 জয় পরাজয়ের প্রশ্ন প্রখানে অবান্তর। কিন্তু এই যে জগতের শ্রেষ্ঠ শক্তি মিত্রশক্তির বিরুদ্ধে এই যে মুষ্টিমেয় ভারতের মুক্তিকামী সৈনিকের দল সমস্ত

১১২