পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 ন্যায্যতঃ বলতে গেলে যে দেশে যুদ্ধ শুরু হয় সে দেশে ব্যক্তিগত সম্পত্তি কিছু থাকে না। যদি আপনারা আপনাদের বিষয় সম্পত্তি আপনাদের নিজস্ব বলে মনে করেন তাহলে আপনারা একটা ভ্রান্ত ধারণার মধ্যে পড়ে আছেন বলতে হবে। যখন কোন দেশ যুদ্ধে জড়িত হয়ে পড়ে তখন প্রত্যেকটি প্রাণ, প্রত্যেকটি সম্পত্তি দেশের অধিকারভুক্ত হয়ে পড়ে! আপনার জীবন আপনার সম্পত্তি আজ থেকে আর আপনার নয়, সমস্তই ভারতবর্ষের— একমাত্র ভারত বর্ষের উদ্দেশ্যেই উৎসর্গীকৃত।

 যদি এই সাধারণ সত্যটুকু উপলব্ধি করতে না পারেন, তাহলে আর একটি খোলা রাস্তা আপনার সামনে পড়ে আছে। যদি আপনি স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ বলে নিজেকে বোধ না করেন, যদি তার দায়িত্ব না বহন করতে চান, যদি আপনি স্বাধীনতা না চান, এবং যদি আপনি স্বাধীনতার মূল্য দিতে ইচ্ছুক না হন, তাহলে আপনার আর একটি মাত্র পথ খোলা আছে। কিন্তু মনে যাখবেন যে যখন যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে তখন সেই ভারতবর্ষে আপনার কোন স্থান থাকবে না। আর যদি ভারতের স্বাধীন সরকার আপনার দুঃখে ব্যথিত হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশী দাক্ষিণ্য যা আপনাকে দেখাতে পারা যায় তা হবে বিলেতে যাবার একখানা তৃতীয় শ্রেণীর টিকিট দিয়ে আপনাকে পবিত্র ভারতভূমি থেকে বহিষ্কৃত করে দেওয়া।

 যে কোন মূল্য দিয়েই হোক আর যে কোন উপায়েই হোক ভারতবর্ষকে আমায় স্বাধীন করতেই হবে এবং আপনাদের এতে পছন্দ না হলেও আপনাদের কর্তব্য সেই গুরু দায়িত্বে নিজের নিজের অংশ গ্রহণ করা। আপনারা যদি এড়িয়ে যেতে চান তাহলে স্পষ্ট বলুন আপনারা স্বাধীনতা চান না, তার জন্য আমি আগেই বলেছি অন্য পথ খোলা আছে।

 আমি কথা দিচ্ছি বন্ধুগণ, যে আমি সে জাতের লোক নই যারা বড় বড় কথা আর ফাঁকা হুমকী দিয়ে বেড়ায়! আমি যা বলি তা পূর্ণ বিবেচনার পর

১৩৪