পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

থেকে সাড়া দিয়ে উঠলো। সেইদিন থেকে সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধুর একনিষ্ঠ অনুগামী। জীবনে একমাত্র দেশবন্ধু ছাড়া আর কারও নেতৃত্ব এমনভাবে তাকে বরণ করে নিতে দেখা যায় নি।

 সুভাষবাবু যখন রীতিমত রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নামলেন, তখন দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। গান্ধীজীর ডাকে সমস্ত দেশ সাড়া দিয়ে উঠেছে। অনেক ডাক্তার, আইন ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। যে সব ছাত্রেরা বিতাড়িত হচ্ছে কলেজ থেকে তাদের নিয়ে অনেকগুলো প্রদেশে জাতীয় কলেজ স্থাপনা করা হয়েছে। বাঙ্গলাদেশে জাতীয় কলেজের ভার ছিল দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের ওপর। চিত্তরঞ্জন দেখলেন সুভাষচন্দ্রের ওপর এই ভাব দেওয়া গেলে খুব ভাল কাজ হবে। কারণ সুভাষচন্দ্র বিলেতে থাকবার সময় ওখানকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্বন্ধে খুব বেশীরকম জানবার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি জানতেন দেশে ফিরে গিয়ে তাকে কাজে নামতে হবে এবং কাজে নামতে হলে প্রথমেই দেশের যুবকদের আধুনিক পদ্ধতিতে শিক্ষিত করে তোলা দরকার। তাই ওখানে নিজের ব্যক্তিগত পড়াশোনার চেয়ে তিনি জোর দিয়েছিলেন জাতিগঠনের মালমশলা সংগ্রহের দিকে। জাতীয় কলেজের ভার হাতে পেয়ে সুভাষবাবু খুব উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। তিনি তার নিজের কর্মপন্থা অনুযায়ী দেশের যুবকদের গড়ে তুলতে লাগলেন। আর সবার পেছনে দেশবন্ধু নিজে সকল বিষয়ে তাঁর বিরাট অভিজ্ঞতা ও বিবেচনা শক্তির সাহায্যে প্রেরণা দিয়ে চললেন সুভাষবাবুকে। এই কলেজে শুধু পুথিগত বিদ্যা নয় ছাত্রের আত্মত্যাগ, দেশপ্রেম ও চরিত্রনিষ্ঠার শিক্ষা পেতে আরম্ভ করলে। তাই সাধারণ কলেজ থেকে এই জাতীয় কলেজের ছাত্রেরা অনেক বিষয়ে উন্নততর হয়ে উঠতে লাগলো।

 যুবকদের নিয়ে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হল। এই বাহিনীর পুরোভাগে রইলেন সুভাষচন্দ্র নিজে। সরকার পক্ষ এতদিন চুপ করে দেখছিলেন

১২