পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পথে ঘাটে লোক নেই। এমন সময় দাড়িওয়ালা এক পেশোয়ারীর আবির্ভাব হল। উত্তমচাঁদ পরিচয় ও উদ্দেশ্য জানতে চাইলে অতিথি অমরনাথের জন্য যেন ইতস্ততঃ করতে লাগলেন। উত্তমচাঁদ অমরনাথকে চা আনতে পাঠিয়ে দিলে আগন্তুক তাঁর পরিচয় দিলেন। বল্লেন তিনি একজন ভারতীয়,—কোন রাজনৈতিক ব্যাপারে তাঁর সাহায্য পেতে এসেছেন। নাম ভগৎরাম ও বাড়ী মর্দান জেলায় খালাচের গ্রামে। তাঁর ভ্রাতা পাঞ্জাবের লাটকে গুলি করার অপরাধে দণ্ডিত হয়েছিলেন। খালাচের গ্রাম উত্তমচাঁদের খুব পরিচিত। তিনি ঐ গ্রামের নওজওয়ান সভার সম্পাদক ছিলেন। কাজেই আলাপ জমে গেল। ভগৎরাম স্পষ্ট করেই বললেন যে তিনি পলাতক সুভাষচন্দ্রের জন্য সাহায্য ভিক্ষা করতে এসেছেন। তিনি তাঁকে রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করছেন। উত্তমচাঁদ চমকে উঠলেন।

 ভগৎরাম বলে চললেন যে ১৩ দিন হল সুভাষচন্দ্র এখানে এসে উট ও গাধাওয়ালাদের এক জঘন্য আড্ডায় রয়েছেন। এখানে তাঁদের বিশেষ কেউ জ়ানা শোনা নেই, তাই খুবই অসুবিধা হচ্ছে। সুতরাং তাঁদের একটা নিরাপদ আশ্রয়স্থান দরকার।

 উত্তমচাঁদ বল্লেন তাঁর বাড়ীতে সুবিধা হবে না। তবে কাছেই তাঁর বিশি বন্ধু হাজি সাহেবের বাড়ী। হাজি সাহেব সেনাদলে কাজ করতেন এবং ১ বৎসর আগে বৃটিশ অফিসারদের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় পদত্যাগ করে চলে আসেন। তিনি জাপান, জার্মান প্রভৃতি খুব ঘুরেছেন। তাঁর স্ত্রী জার্মান। তাছাড়া তিনি একদিকে যেমন বৃটিশ বিদ্বেষী তেমনি সুভাষচন্দ্রের অনুরাগী। সুতরাং তাঁর যে মোজা ও গেঞ্জীর কারখানা আছে, সেখানে একটা ব্যবস্থা করলেও করতে পারেন। যাবার আগে ভগৎরাম বলে গেলেন যে বর্তমানে তাঁরা দুজনেই ছদ্মবেশে আছেন ও ছদ্মনাম ব্যবহার করছেন। তাঁর ছদ্মনাম রহমৎ খাঁ আর সুভাষচন্দ্রের ছদ্মনাম জিয়া উদ্দীন।

১৫৭