পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জীবনলাল প্রায় প্রতি বৎসরই কাজের জন্য এই সময়ে তাঁর বাড়ীতে আসতেন। তিনি এসে পড়ায় একটু মুস্কিল বাধলো। অবশ্য স্ত্রীর অসুখের অজুহাত দেখিয়ে উত্তমচাঁদ জীবনলালকে তাঁর বাড়ীতে উঠতে দিলেন না কিন্তু একদিন ঘটনাচক্রে ‘ম’ ও রহমৎ খাঁর সঙ্গে যখন তিনি কথা কইছিলেন তখন জীবনলাল এসে উপস্থিত হলেন। জীবনলাল ম’কে চিনতেন তাই তিনি এই জুয়াড়ীটার সঙ্গে উত্তমচাঁদের সম্বন্ধ আছে দেখে রেগে উঠলেন। তখন কোনগতিকে এড়িয়ে গেলেও সেদিনই দুপুরে উত্তমচাঁদ ‘ম’কে যখন একখানি ১০০ টাকার নোট দিচ্ছিলেন সেই সময় জীবনলাল এসে পড়লেন। জীবনলাল আন্দাজ করছিলেন ভেতরে একটা ব্যাপার আছে কিন্তু উত্তমচাঁদ সুভাষবাবুর সঙ্গে আলোচনা না করে সমস্ত কথা প্রকাশ করা সমীচীন বোধ করলেন না। প্রকৃত পক্ষে সুভাষবাবুও ষতদিন না তিনি চলে যাচ্ছেন ততদিন প্রকাশ করতে বারণ করে দিলেন। এদিকে ম’ এর ব্যবস্থা সব ঠিক, অথচ যেদিন যাওয়া হবে তার আগের দিন কারোনির স্ত্রী জানিয়ে গেলেন যে সব ব্যবস্থা ঠিক হয়ে গেছে। রোম থেকে বার্তাবাহক যাত্রা করেছে। তবে তার আগে সুভাষবাবুর একখানা ফোটো নিতে হবে। এবং তাঁরা গোপনে সুভাষবাবুকে গাড়ী করে নিয়ে গিয়ে ফোটা তুলে আনবেন। অগত্যা রহমৎ খাঁ ম’কে জানালেন যে তাঁর অপর বন্ধুটি যাঁর যাবার কথা ছিল তিনি অসুস্থ হয়ে পড়াতে এখনও কাবুলে এসে পৌঁছতে পারেন নি। এই অপর বন্ধুটির (অর্থাৎ সুভাষবাবুর সঙ্গে ম’ এর অবশ্য এযাবৎ পরিচয় হয় নি।

 প্রশ্ন উঠলো কোন পথে সুভাষবাবু যাবেন। রহমৎ খাঁ ও উত্তমচাঁদের মতে ম’এর সঙ্গে যাওয়াই ভাল কিন্তু সুভাষবাবুর নিজের মত অন্যরূপ। তিনি বললেন যে রাশিয়ান্‌রা একবার তাঁকে সাহায্য করতে অসম্মত হয়েছে অথচ ইটালিয়ানরা সব রকম ব্যবস্থা নিজের থেকেই করেছে। সুতরাং প্রথমে ইটালীতে যাওয়াই সঙ্গত, সেখান থেকে মস্কো যাওয়া সহজতর হবে। তাছাড়া ম’এর পথ বিপদসঙ্কুল যে কোন মুহূর্তে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

১৬৪