পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সকল সভাতেই স্বরাজ পার্টি বিপুল জয়লাভ করেছে। এই জয়লাভের মূলে ছিলেন দেশবন্ধু নিজে এবং সুভাষ পরিচালিত পত্রিকা ফরওয়ার্ড। বাস্তবিক সুভাষবাবুর সুদক্ষ পরিচালনার গুণে এই কাগজ অতি অল্প দিনের মধ্যেই জনসাধারণের মনে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছিল। স্বরাজ পার্টির জয় পরোক্ষে সুভাষচন্দ্রেরই জয়!

 এরপর ১৯২৪ সালে স্বরাজ পার্টি প্রথম কোলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করলো। ফলে দেশবন্ধু মেয়র এবং সুভাষচন্দ্র প্রধান কর্মকর্তার পদলাভ করলেন। এবং কোলকাতা কর্পোরেশনের দেখাদেখি অন্যান্য বড় বড় সহরেও এইরকম নির্বাচন চললে এবং স্বরাজ পাটি জয়লাভ করতে থাকলো।

 সুভাষচন্দ্রের কর্পোরেশনের প্রধান কর্মকর্তার পদগ্রহণ একটি স্মরণীয় ঘটনা। এর আগে এই পদের বেতন ছিল মাসিক তিন হাজার টাকা। সুভাষবাবু সেটা গোড়াতেই কমিয়ে দেড় হাজার করে নিলেন যাতে বাকী টাকাটা জনহিতকর কার্যে ব্যবহৃত হতে পারে। অবশ্য বাকী যে দেড় হাজার টাকা তিনি নিতেন সেই টাকার মধ্যে অধিকাংশই তিনি দান করে ফেলতেন। নিজের জন্যে প্রায় কিছুই থাকতো না বলতে গেলে। যাই হোক তিনি এবং দেশবন্ধু দু'জনে কর্পোরেশনের কর্মব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন করে ফেললেন। মুষ্টিমেয় শ্বেতাঙ্গদের হাত থেকে জনসাধারণের কর্পোরেশন জনসাধারণের হাতের মধ্যে এনে ফেললেন। সেদিন থেকেই ইংরাজ বুঝতে শেখে সুভাষচন্দ্রের শক্তি কতখানি। সুভাষবাবুর আদেশেই কর্পোরেশনের জনহিতকর কাজের পরিধি বেড়ে গেল। দরিদ্রদের জন্য অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাক্তার খানা, দুগ্ধ-কেন্দ্র প্রভৃতি খোলা হতে লাগলো। কোলকাতার রাস্তাঘাট পার্ক প্রভৃতির নামকরণ হতে থাকলো দেশের নেতাদের নামে। বড় বড় নেতাদের সহরবাসীদের পক্ষ থেকে সম্বর্ধনার ব্যবস্থা হতে লাগলো। সব চেয়ে আনন্দের বিষয় এই যে কর্পোরেশনের অফিসের সাজপোষাক সমস্ত খদ্দরের হবে বলে স্থির করা হল। কর্পোরেশনের

১৬