পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নয়—সে যে শরীরেরও কষ্ট এবং প্রস্তুত থাকলেও, দেহ যে সময় সময় দুর্বল হয়ে পড়ে।......

 ‘একথা আমাকে বলতেই হবে যে, জেলের মধ্যে যে নির্জনতায় মানুষকে বা হয়ে দিন কাটাতে হয় সেই নির্জনতাই তাকে জীবনের চরম সমস্যাগুলি তলিয়ে বুঝবার সুযোগ দেয়। আমার নিজের সম্বন্ধে একথা বলতে পারি যে, আমাদেব ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত জীবনের অনেক জটিল প্রশ্নই বছর খানেক আগের চেে এখন যেন অনেকটা সমাধানের দিকে পৌছচ্ছে। যে সমস্ত মতামত এক সম নিতান্ত ক্ষীণভাবে চিন্তা বা প্রকাশ করা যেত, আজ যেন সেগুলো স্পষ্ট পরিব হয়ে উঠছে। অন্য কারণে না হলেও শুধু এই জন্যেই আমার মেয়াদ শেষ হয়। পর্যন্ত আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে, অনেকখানি লাভবান হতে পারব।’...

 ঠিক এমনি সময়েই বাঙ্গলার ভাগ্যাকাশে সবচেয়ে বড় দুর্যোগ ঘনিয়ে এল। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন হঠাৎ পরলোক গমন করলেন। বিনামেঘে বজ্রাঘাতের মতই আঘাত করলে সমস্ত বাঙ্গালীজাতিকে এই নিদারুণ দুর্ঘটনা। বিশেষ করে আঘাত পেলেন সুভাষ চন্দ্র নিজে। তিনি প্রথম বোধ করলেন যে, তিনি-তথা বাঙ্গলাদেশ অভিভাবকহীন হল। তিনি বুঝ এবার সত্যিকারের নেতৃত্ব তার ওপর এসে পড়বে। বাঙ্গলার মধ্যে দলাদলি শুরু হবে। গান্ধী পন্থীর দল যাব এতদিন দেশবন্ধুর অসাধারণ ব্যক্তিত্বের পাশে ম্লান হয়ে গিয়েছিল তারা আবার ক্ষমত। অধিকার করবার জন্যে মাথা তুলে দাঁড়াবে। এখন হয় স্বরাজ পার্টি ভেঙ্গে দিতে হবে আর না হয়ত যোগ দিতে হবে সেনগুপ্তের দলে। কোনটাই তার পক্ষে যুক্তি সঙ্গত নয়। অথচ যদি স্বরাজ পার্টিকে বজায় রাখতে হয় তাহলে তাকে নিজেকে ব্যবস্থা পরিষদে গিয়ে কাজ করতে হবে যা আজ পর্যন্ত তিনি করেননি।) মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এসব প্রশ্ন ওঠে না তা তিনি জানতেন তাই সবার চেযে যেটা তাকে বেশী পীড়া দিতে লাগলো সে হল দেশবন্ধুর মৃত্যুতে বাঙ্গলার বিসে করে তার নিজের ব্যক্তিগত জীবনে অপূরণীয় ক্ষতি। দেশবন্ধুর কাছেই

২১