পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বড়লাট আরুইন গোল টেবিল বৈঠকের কথা ঘোষণা করলেন। তাছাড়া আরও বললেন যে ১৯১৭ সালের ঘোষণা অনুযায়ী সহজেই প্রতীয়মান হয় যে ঔপনিবেশিক স্বায়ত্ত শাসনই ভারতের শাসন ব্যবস্থার চরম পরিণতি।

 এই ঘোষণা শুনে দিল্লীতে সর্বদলীয় সম্মিলনের নেতারা মিলিত হলেন এবং বড়লাটের নিকট এই মর্মে এক স্মারকলিপি:পাঠালেন যে তারা ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসন অর্জন করার বিষয়ে সরকার পক্ষের সহিত সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছেন। জওহরলালও তাতে সই করলেন। এদিকে সুভাষবাবু একটা বিরুদ্ধ ঘোষণাপত্র তৈরী কবে পাঠালেন। তবু শেষ পর্যন্ত গান্ধীজী, মতিলাল নেহরু এবং ভি, জে, প্যাটেল আরুইনের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে গেলেন। কিন্তু তাদেব ফিরতে হল ভগ্নমনোরথ ও শূন্য হাত নিয়ে। মহাত্মাজী নাহোর কংগ্রেসে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী নিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন কবলেন কিন্তু তার সঙ্গে আর একটি লাইন যুক্ত করে দিলেন এই মর্মে যে, মহামান্য বড়লাট বাহাদুর যে দৈবক্রমে বোমাব আঘাত থেকে পরিত্রাণ পেয়েছেন তাতে কংগ্রেস তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছে। সেই সময় আইনের ট্রেণে বোমা মার। হয়েছিল কিন্তু তিনি দৈবক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। যাই হোক গান্ধীজীর এই প্রস্তাবে সুভাষবাবু পরিচালিত উগ্র জাতীয়তাবাদী তরুণের দল অত্যন্ত রুষ্ট হযে উঠলো। জোর প্রতিবাদ জানানো সত্বেও গান্ধীজীর এ প্রস্তাব গৃহীত হয়ে গেল।

 এদিকে সুভাষচন্দ্র আর একটি প্রস্তাব তুললেন। তিনি বললেন যে কংগ্রেস যে শুধু পূর্ণ স্বাধীনতা দাবী করছে তা নয় কংগ্রেস সঙ্গে সঙ্গে সিন ফিনের আদর্শ অনুযায়ী এক স্বাধীন গভর্ণমেণ্ট গঠন করবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে দেশের কিমাণ মজুর ও যুব সম্প্রদায়কে জাগিয়ে তুলবে। কিন্তু কংগ্রেস তার এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করে দিলে। তাইতে তিনি বলেছিলেন যে, কংগ্রেস আজ যে কথার মর্ম বুঝলো না তার মর্ম সে আরও এক বছর পর উপলব্ধি করতে পারবে। কিন্তু তার জন্যে যতখানি সময় নষ্ট হয়ে যাবে তা আমাদের সংগ্রামের পক্ষে অমূল্য।

২৮