পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আরুইনের সাথে চুক্তির ফলে গান্ধীজী হঠাৎ অসহযোগ আন্দোলন বন্ধ করে দেবার আদেশ তার ফলে দেশবাসী বিশেষ করে তরুণ সৈনিকের দল অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে এবং গান্ধীজীর ওপর শ্রদ্ধা হারাতে থাকে। তাছাড়া গান্ধীজী আরুইনের সঙ্গে পরামর্শ করার আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে ফাসির অপরাধে দণ্ডিত ভগত সিংহের ফাসি তিনি নাকচ করবার সাধ্যমত চেষ্টা করবেন। অথচ আইনকে এই বিষয়ে মোটেই তিনি রাজী করাতে পারলেন না, এদিকে আন্দোলনও হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। উপরন্তু ২৩শে মার্চ যেদিন করাচীতে কংগ্রেসের অধিবেশন বসবে ঠিক সেইদিনই ভগত সিংহ সুখদেব এবং রাজগুরুর ফাসি হয়ে গেল। সমস্ত তরুণ সমাজ একেবারে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো এই খবর পেয়ে। গান্ধীজী যখন করাচীতে এসে পৌঁছলেন তখন কৃষ্ণ পতাকা দিয়ে তাকে সম্বর্ধনা জানানো হল। এমন কি কেউ কেউ ঢিল পর্যন্ত ছুড়লো। এদিকে আবার সুভাষবাবুর নেতৃত্বে একই সময়ে কংগ্রেস অধিবেশনের পাশাপাশি যুব সম্প্রদায়ের অধিবেশন শুরু হয়ে গেল। সুভাষবাবু প্রকাশ্য সভায় গান্ধীজীর নীতির নিন্দা করলেন। তিনি বললেন গান্ধী-আইন চুক্তি দেশবাসীর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। তাছাড়া তিনি বললেন যে আগামী গোল-টেবিল বৈঠকে একমাত্র গান্ধীজীই ভারতের সঠিক প্রতিনিধি হতে পারেন না।

 সমস্ত উগ্রপন্থীরা এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন বটে কিন্তু ওদিকে কংগ্রেস মণ্ডপে গান্ধীজীকেই একমাত্র প্রতিনিধি বলে ঘোষণা করে দেওয়া হল। এমন। কি ভগত সিংহের বাবা কিষেণ সিংহও তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলে। গান্ধীজীরই জয় হল করাচীতে।

 যাই হোক, গোল টেবিল বৈঠকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আগে ১৯৩২ সালে গান্ধীজী বোম্বাইতে এক মিটিং ডাকলেন। সুভাষবাবু ওয়াকিং কমিটির সদস্য থাকলেও তাঁকে বিশেষ আমন্ত্রণ পাঠানো হল একটা মীমাংসা করবার জন্যে।

৩২