পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

না। জার্মাণীতে তখন হিটলারের অভ্যুদয় সূচিত হয়ে গেছে। এই নির্দেশের মূলে বোধ হয় তাই-ই ছিল।

 যাই হোক সুভাষবাবু প্রথমে ভিয়েনায় এসে নামলেন। অস্ট্রিয়ার নগরী তখম সোশ্যাল ডেমোক্রাটরা পরিচালনা করছে মিউনিসিপ্যালিটি তাদের হাতে। অথচ ফ্যাসিস্টরাও বিশেষ শক্তিশালী দল গঠন করে তুলেছে। সুভাষবার কোন বিশেষ দলের দিকে কোন বিশেষ অনুরাগ না দেখিয়ে দুইদলের মধ্যে বিশেষ আলাপ-আলোচনা শুরু করে দিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে দুই দলের কাছ থেকেই অনেক কিছু ভাল জিনিষ শেখবার ও গ্রহণ করবার আছে। তিনি নিজে দেশে থাকতে কর্পোরেশন বা মিউনিসিপ্যালিটির কর্ম-পদ্ধতির সঙ্গে বিশেষ জড়িত ছিলেন তাই ভিয়েনাতেও সোশ্যাল ডেমোক্রাটদের সঙ্গে মিশে তাদের মিউনিসিপ্যালিটির কার্যকলাপ পরিদর্শন করতে লাগলেন, আধুনিকতম শাসনব্যবস্থা শিক্ষা করতে লাগলেন। ওদিকে ফ্যাসিস্টদের মধ্যে যে শৃঙ্খলা, দৃঢ়তা ও নিয়মানুবর্তিতা আছে যে সবও তাঁকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করতো। তাই ফ্যাসিস্টদের কুচকাওয়াজেও তাঁকে উপস্থিত থাকতে দেখা গিয়েছে। এই সময় স্থানীয় মেয়র কার্ল সিয়েটুজের সাথে তাঁর খুব ঘনিষ্টত। হয়। তিনি সোশ্যালিস্টদের নাগরিক শাসন ব্যবস্থা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন কিন্তু সোশ্যালিষ্ট পাটির মধ্যে নিজেকে এক করে ফেলেন নি।

 সুভাষবাবু যখন ভিয়েনায় এসে পৌঁছলেন তখন কেন্দ্রীয় পরিষদের ভূতপূর্ব সভাপতি বিঠলভাই প্যাটেল চিকিৎসার জন্য ওখানে অবস্থান করছিলেন। বিঠলভাই প্যাটেল তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সকল ক্ষেত্রে গান্ধীদের অনুগামী ছিলেন না, উপরন্তু কয়েকটা বিষয়ে তিনি সুভাষবাবুর অনুসৃত পন্থারই অনুরক্ত ছিলেন। বিঠলভাইকে পেয়ে সুভাষবাবু খুব উৎসাহিত বোধ করলেন। এবং এই দুই অসুস্থ নেতা সম্মিলিত ভাবে গান্ধীবাদের বিরুদ্ধে প্রচারকার্য শুরু করে দিলেন। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল গান্ধীজীর ক্ষীয়মান প্রভাব থেকে দেশকে সম্পূর্ণ-

৩৫