পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভাবে মুক্ত করে একটা সক্রিয় কর্মপন্থার নির্দেশ দেওয়া এবং দ্বিতীয়তঃ ইউরোপে ভারতবর্ষের আন্তরিক অবস্থা সম্বন্ধে সঠিক একটা পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়া। এই মহৎ কার্যের জন্য বিঠলভাই প্যাটেল সুভাষবাবুর হাতে এক লক্ষ টাকা দান করলেন।

 প্রথমেই তাঁরা দুজনে এক যুক্তবিবৃতি বের করলেন। তাতে লেখা ছিল যে, অসহযোগ আন্দোলনের এই হঠাৎ অবসান গান্ধীজীর নেতৃত্বের ব্যর্থতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। আমরা স্পষ্টই ঘোষণা করছি যে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে গান্ধীজী ব্যর্থ হয়েছেন। গান্ধীজীর পূর্বেকার কর্ম-পদ্ধতির সহিত সামঞ্জস্যহীন এই যে বর্তমান কার্যনীতির একঘেয়ে পুনরাবৃত্তির চেষ্টা এ সব সম্পূর্ণ দূর করে কংগ্রেসকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে কংগ্রেস সম্পূর্ণ নতুন এবং সময়োপযোগী নেতার বিধান অনুযায়ী কোন সক্রিয় এবং মৌলিক পন্থা অবলম্বন করতে পারে।

 অন্যত্র সুভাষবাবু তাঁর ইংরাজী পুস্তক ‘ইণ্ডিয়ান স্ট্রাগলে’ লিখেছিলেন, গান্ধীজীর ব্যর্থতার কারণ এ নয় যে তিনি সমর্থন পাননি। বরঞ্চ অন্যান্য দেশে যে অল্পসংখ্যক লোক নিয়ে অন্যান্য দেশের নেতার। তাঁদের দেশকে মুক্ত করতে পেরেছেন গান্ধীজী তার থেকে অনেক বেশী সমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু একথা ভুললে চলবে না যে গান্ধীজী যেমন তাঁর নিজের দলের লোকদের চিনতে পেরেছিলেন সেই পরিমাণে তাঁর বিরুদ্ধ দলকে কিছুই বুঝতে চেষ্টা করেন নি। ভারতের ভবিষ্যত— যে সমস্ত বীর সৈনিকের দল নির্দিষ্ট পন্থা অবলম্বন করে ত্যাগ ও নির্যাতনের জন্যে প্রস্তুত হচ্ছে, তাদের হাতের ওপরই সম্পূর্ণ নির্ভর করছে।

 সুভাষবাবুর এই সমালোচনা—গান্ধীবাদের ওপর এই আক্রমণ ইউরোপ খুব উৎসাহের সঙ্গে গ্রহণ করেছিল। চারদিক থেকে তাঁর লেখা পড়বার আগ্রহ দেখা গিয়েছিল। ইউরোপে থাকতেই তিনি তাঁর পুস্তক ‘ইণ্ডিয়ান স্ট্রাগ্‌ল্ সম্পূর্ণ করেন। এই বই ইংলণ্ডে প্রথম প্রকাশিত হবার পর সার সামুয়েল হোর

৩৬