পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কংগ্রেসের সিংহাসনে

 আগেই দেখা গেছে যে সুভাষবাবু যখন ইউরোপে ছিলেন তখন ধীরে ধীরে গান্ধীজীর প্রভাব আবার বিস্তার লাভ করছে। অবশ্য গান্ধীজী প্রত্যক্ষভাবে কংগ্রেস থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এবং কার্যতঃ কংগ্রেসের কর্ণধারস্বরূপ হযে দাড়িয়েছেন আজাদ, রাজেন্দ্রপ্রসাদ ও প্যাটেল। জন্‌ গান্থার এঁদের নাম দিয়েছিলেন—Zonal chieftains. এই তিনজন নেতা কংগ্রেস পার্লামেণ্টারী বোর্ডের কার্যভার তিনভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন। তাছাড়া কংগ্রেস তখন প্রাদেশিক মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করেছে এবং যারা প্রধান মন্ত্রীর পদ গ্রহণ করছেন তারা সকলেই গান্ধীবাদের ওপর বিশ্বাস করেন। এমন কি গান্ধীজী আদেশ দিলে তাঁরা তৎক্ষণাৎ মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করতে প্রস্তুত আছেন। এদিকে সোশ্যালিষ্ট দলও তাদের স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে কংগ্রেস হাই কমাণ্ডের সঙ্গে যোগ দিয়ে মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করতে চেষ্টা করছে। তার কারণ সুভাষবাবুর অনুপস্থিতি। জওহরলাল ইতিমধ্যেই গান্ধীজীর কাছে আনুগত্য স্বীকার করে নিয়েছেন, জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং নরেন্দ্র দত্ত কাজ করলেও সমস্ত ভাবতবর্ষে একটা দল চালাবার মত সুযোগ সুবিধা অর্জন করতে পারেন নি। তাই সুভাষবাবু দ্বিতীয় বার ইউরোপ যাবার আগে যে কয়দিন এখানে ছিলেন তার মধ্যেই এই সোশ্যালিষ্ট দলের নেতা হয়ে দাঁড়ালেন। অবশ্য সোশ্যালিষ্ট দলের মধ্যে যে পরিবর্তনের পূর্বাভাষ দেখা যাচ্ছিল তিনি সেটা পছন্দ করতে পারেন নি। তাই তাঁর কর্মপন্থার দুটো বিভিন্ন দিক স্পষ্ট হয়ে উঠলো! এক: কংগ্রেস হাই-কম্যাণ্ড যাতে বৃটিশ প্রস্তাবিত ফেডারেশনে সম্মতি না দিয়ে বসে এবং দুই: সমস্ত বামপন্থীদের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের অধীনে সমস্ত কিষাণ—মজুরদের স্বার্থ রক্ষা করা।

৪৭