পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 বাদানুবাদ চলতে লাগলো। কিন্তু এটা কারও বুঝতে বাকী রইল না যে বিশিষ্ট নেতাদের যুক্ত বিবৃতিব সাহায্যে কোন বিশেষ লোককে নির্বাচিত করা শুধু অসম্ভব নয়—অন্যায়। উপরন্তু সুভাষবাবুর যুক্তিমূলক বিবৃতি এবং পক্ষপাতিত্ব দোষহীন নিঃস্বার্থ কর্মপ্রচেষ্টা সকলকে মুগ্ধ করছে। স্থভাষবাবু বললেন, আমি ব্যক্তিগত স্বার্থ-সিদ্ধির জন্যে একথা বলছি না। এ আমি আমার দলগত আদর্শের মর্যাদা রক্ষার জন্যে বলছি। ‘আমার পরিবর্তে আচার্য নরেন্দ্র দেও’র মত একজন ফেডারেশন-বিরোধী বিশিষ্ট কর্মীর নাম প্রস্তাব করা যেতে পারে। আমার নাম উঠেছে বলে আমি অনুতাপ করছি।

 তিনি এমন পর্যন্ত বললেন, যে এখনও এই সঙ্ঘর্ষ প্রতিরোধ করার সময় আছে যদি দক্ষিণপন্থীদল তাঁদের মধ্য থেকেই এমন কোন নেতাকে নির্বাচিত করেন যাঁর ওপর বামপন্থীদল সম্পূর্ণ নির্ভর করতে পারে।

 কিন্তু দক্ষিণপন্থী এ প্রস্তাবেও কর্ণপাত করলে না।

 এর পর সম্মুখ সমর ছাড়া আব গত্যন্তর নেই।

 আর হলও তাই! ভোটের ফলাফল বেরোতে দেখা গেল, সুভাষবাবুর পক্ষে ভোট ১৫৮০ আর সীতারামীয়ার পক্ষে ১৩৭৭।

 নেহাৎ সামান্য নয় রীতিমত ২০৩ ভোটের তফাং!

 মুকুটহীন সম্রাট সুভাষচন্দ্র কোন এক অপার্থিব সাম্রাজ্য জয় করে এসে বসলেন সিংহাসনে। পুনর্বার!

 এতবড় জয়লাভে সুভাষবাবু এতটুকুও অধীর হয়ে উঠলেন না আনন্দে বা উত্তেজনায়। তিনি স্থির মস্তিষ্কে এই জয়বার্তা গ্রহণ করলেন। বললেন, আনন্দে আত্মহারা হবার সময় এখন নয়। এখন আমাদের দৃষ্টি শুধু আগামী কালের দিকে। আগামী কালের দিকে চেয়ে আমাদের কাজ করতে হবে, ব্রত গ্রহণ করতে হবে। এই প্রতিযোগিতার ফলাফল আমরা মাথা নত করে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে যেন গ্রহণ করতে পারি। ···পাছে ভারতের মুক্তি সংগ্রামের শত্রুরা মনে

৫৬