পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এবং গান্ধীজী তাঁকে আগের মতই যথেষ্ট হৃদ্যতার সঙ্গে সম্ভাষণ জানিয়েছেন।

 এই সংবাদ সত্যই যে আশ্বাসপূর্ণ সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। যদিও সুভাষ বাবু সাবধান করে দিয়েছিলেন যে ইতিমধ্যেই এসম্বন্ধে কোন মতামত দেওয়া খুব বেশী যুক্তি সঙ্গত হবে না তবুও সুভাষ বাবুর এই আশার বাণীতে যখন গান্ধীজীর সমর্থন আছে জানা গেল, তখন সত্যই সাধারণ লোকে বিশেষ আশান্বিত হয়ে উঠলো। কিন্তু এর পরেই এল গান্ধীজীর বাণী। তিনি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে বললেন, যে অধিকাংশ প্রতিনিধির দল যখন গান্ধীবাদের বিরুদ্ধে তখন তাঁর পরামর্শ নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। সুভাষ বাবু যে মতে বিশ্বাস করেন সেই মতবাদে বিশ্বাসী নেতাদের নিয়ে তিনি যেন কংগ্রেসের মন্ত্রিসভা গঠন করেন; কার্যকরী সমিতিতে দক্ষিণ পন্থী নেতাদের অংশ গ্রহণ করার কোন প্রয়োজন নেই।

 শুধু এই বিবৃতি নয়, এর সঙ্গে বারোজন দক্ষিণ-পন্থী নেতার যুক্ত তার এলো যে তাঁরা সকলেই পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। তার পাবার পরই সুভাষ বাবু তাঁদের কাছে থেকে একখানা যুক্তপত্রও পেলেন। সেই বারোজন নেতাই তাতে স্বাক্ষর করেছেন— তাঁরা হলেন—সর্দার প্যাটেল, মৌলানা আজাদ, রাজেন্দ্রপ্রসাদ, সরোজিনী নাইডু, পট্টভী সীতারামিয়া, আচার্য্য কৃপালনী, ভুলাভাই দেশাই, হরেকৃষ্ণ মহাতাব, আবদুল গফুর খাঁ, শেঠ যমুনালাল বাজাজ, জয়রামদাস, দৌলতরাম এবং আরও একজন। সেই চিঠিতে লেখা ছিল— যারা নিজেদের যুক্তিবাদী ও অগ্রগামী বলে মনে করেন তাঁরা আমাদের কার্যের সমালোচনায় সন্তুষ্ট না থেকে নিজেরাই যেন সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বহুদিন এই অবস্থা সহ্য করা হয়েছে, এখন যখন বামপন্থী দলের প্রাধান্য স্বীকৃত হয়েছে তখন তাঁদেরই কংগ্রেসকে স্বাধীনভাবে চালনা করবার সুযোগ দেওয়া উচিত। যদি তাঁরা ব্যর্থ হন তাহলে দেশ মস্ত বড় একটা প্রয়োজনীয় শিক্ষা পাবে।

৫৯