পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করা হল না। ফলে গান্ধীপন্থী দলেরই জয় সুনিশ্চিতভাবে নির্ধারিত হয়ে গেল।

 ১৩ই মার্চ সাধারণ অধিবেশন। কিন্তু তার আগে সুভাষবাবুর শরীর অত্যন্ত খারাপ হয়ে গেল। ডাক্তারেরা পরামর্শ দিলেন জব্বলপুর হাসপাতালে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হোক। কিন্তু সুভাষবাবু তাতে রাজী হলেন না। পণ্ডিত জওহরলালও তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন কিন্তু তিনি বললেন, আমি হাসপাতালে যাবার জন্যে এখানে আসি নি। এখানকার অধিবেশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে স্থানান্তরিত হওয়ার চেয়ে মৃত্যুকে বরণ করা শ্রেয়ঃ মনে করি।

 অধিবেশন শুরু হল। সুভাষবাবুর পরিবর্তে তাঁর একখানা ফটো ৫২ হাতী বাহিত রথে শোভাযাত্রা করে নিয়ে আসা হল মণ্ডপে। যাই হোক সাধারণ অধিবেশনেও তাঁকে পরাজয় স্বীকার করতে হল। এমনকি সোশ্যালিষ্ট পার্টিও তার বিরুদ্ধাচরণ করতে দ্বিধাবোধ করলে না। কিন্তু সুভাষবাবু পদত্যাগ করলেন না। উপরন্তু সকলের নির্দেশ মত স্বাস্থ্যের একটু উন্নতি হলেই গান্ধীজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সম্মত হলেন। এর মধ্যে তিনি কোলকাতায় ফিরে এলেন।

 কিন্তু তাঁর স্বাস্থ্য এতই ভেঙ্গে পড়েছিল যে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠলো। বিরূদ্ধ দল বলতে লাগল যে ইচ্ছে করেই তিনি দেখা করছেন না। তাই তিনি গান্ধীজীকে অনুরোধ করলেন কোলকাতায় এসে দেখা করতে। কিন্তু কোন ফল হল না। অগত্যা সুভাষবাবু যখন দেখলেন মীমাংসার কোন পথ নেই তখন কোলকাতায় তিনি এ, আই, সি, সির এক জরুরী অধিবেশন ডাকলেন। এই কোলকাতায় কত বড় বড় সংগ্রামের প্রথম উদ্ভব সম্ভব হয়েছে, কত বীর নেতা নতুন পথের সন্ধান দিয়েছেন এই কোলকাতা নগরীর বুকের উপর দাঁড়িয়ে। এবারেও সুভাষবাবু তাঁর চরম বিচারের পটভূমি হিসাবে কোলকাতারই নাম প্রস্তাব করলেন। অনেকে মন্তব্য করলেন যে বাঙ্গলাদেশে অর্থাৎ কোলকাতায় এ মীটিং হলে বাঙ্গলার উগ্রপন্থী—সুভাষপন্থী তরুণের দল

৬২