পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আসলে সুভাষচন্দ্র ও গান্ধীজীর একই বৃন্তের দুটি ফুল—একই শক্তির দুই অখণ্ড প্রকাশ।

 সুভাষচন্দ্রের রহস্যজনক অন্তর্ধানের পর ইংলণ্ডের নিউজ রিভিয়ু মহাত্মাজী ও সুভাষচন্দ্রকে তুলনা করে লিখেছিল— ‘Plump, amiable Subhas Chandra Bose, ex-president of the Congress, later Leader of the Swarajya (Self rule) Party, had a programme which was as different from the mild Mahatma as chalk from cheese.

 প্রধান প্রধান যুক্তি—

 (১) সুভাষচন্দ্রের দাবী বৃটনের কাছ থেকে পূর্ণ স্বাধীনতা (গান্ধীজী আপোষে রাজী আছেন)।

 (২) জাতীয় আন্দোলনের অবারিত গতি। গান্ধী স্থগিত রাখতে চেয়েছেন)।

 (৩) ব্যাপক শিল্পের প্রসার বা Progressive industrialisation (গান্ধীজী তাঁর প্রিয় খেয়াল বশতঃ এর বিরোধী এবং কুটিরশিল্পের প্রসারে যত্নবান)।

 এখানে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যেতে পারে যে সুভাষচন্দ্রই জাতীয় পরিকল্পনার বা national planningএর প্রবর্তক।


 সর্বশেষে গান্ধীসম্বন্ধে লিখিত সুভাষচন্দ্রের কয়েকটি কথার উল্লেখ করি— গান্ধীজীর মধ্যে এমন কিছু আছে যা ভারতীয় জনসাধারণকে আকৃষ্ট করে। অন্য দেশে জন্মালে তিনি হয়তো একেবারেই বাতিল হয়ে যেতেন··· যেখানেই তিনি যান দরিদ্রের মধ্যে দরিদ্রতম ব্যক্তিও বুঝতে পারে যে তিনি ভারতের মাটিতেই গড়া—অস্থিতে এবং মজ্জাতে। তিনি যখন কথা বলেন তা এমন ভাষায় বলেন যার মর্ম তারা বুঝতে পারে—এবং সে ভাষা হার্বার্ট স্পেন্সার বা এডমণ্ড বার্কের নয়— যেমন ধরুন সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী ব্যবহার করতেন—সে ভাষা ভগবদ্‌গীতা এবং রামায়ণের ভাষা।

৭২