পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করতে অসম্মত হয়েছেন। এখন ঐক্যের খাতিরে আমরা বামপন্থীরা যদি তাঁদের নিকট বশ্যতা স্বীকার করি, তবে সেটা কি সঙ্গত হবে? যদি তাঁদের কোন সক্রিয় কর্মপন্থা থাকতো তবে এইরূপ করা চলতো। কিন্তু গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে আমার যে সব পত্র-বিনিময় হয়েছে দুর্ভাগ্যক্রমে তার থেকে স্পষ্ট দেখা গেছে যে তিনি আর আসন্ন সংগ্রামের কথা চিন্তা করছেন না। মন্ত্রিমণ্ডলী এবং তাঁদের যে সমস্ত পরিচালক কংগ্রেসের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে আছেন, তাঁরাও সংগ্রামের কথা চিন্তা করেন না। এই রকম অবস্থায় দক্ষিণপন্থীদের কাছে বশ্যতা স্বীকার করে বাইরে ঐক্যের ঠাট বজায় রাখলে প্রকৃত প্রস্তাবে কংগ্রেসের ভিতরে গতিহীনতা এবং সংস্কার বিমুখতাকে চিরস্থায়ী করা হবে। আমরা এরকম করতে পারি ন!—আমাদের এরকম করা উচিতও নয়। সুতরাং বর্তমানে বামপন্থীদের পক্ষে দক্ষিণপন্থীদের থেকে পৃথক হয়ে নিজেদের শক্তি সংহত করবার সময় এসেছে। এই কাজটি সমাধা হলেই বামপন্থীরা কংগ্রেসের ভিতর সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে জাতীয় কংগ্রেসের নামে পুনরায় স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রবৃত্ত হতে পারবেন। এইটেই আজ বামপন্থীদের কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনের জন্যই ফরওয়ার্ড ব্লকের সৃষ্টি হয়েছে।

 ১৯৩৯ সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠনে আত্মনিয়োগ করেন। এই বছরেই আগষ্ট মাসে কংগ্রেসের কর্তৃপক্ষ এই মর্মে এক বিবৃতি প্রকাশ করেন—

 কংগ্রেস কার্যকরী সমিতি এই সিদ্ধান্ত জানাচ্ছেন যে তাঁর বিধি বহির্গত আচরণের জন্য ১৯৩৯ সালের আগষ্ট মাস থেকে তিন বর্ষকাল পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসু বঙ্গীয় কংগ্রেস সমিতির সভাপতি বা যে কোন নির্বাচিত কংগ্রেস সমিতির সভ্য হিসাবে অনুপযুক্ত বিবেচিত হলেন।

 ওয়ার্ধা থেকে এই সংবাদ যখন তাঁর কাছে পৌঁছলো শোনা যায় তিনি বলেছিলেন—আর কিছু নেই?

৭৪