পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করেছেন জেলের মধ্যে, শরৎ বাবু অনির্দিষ্ট কালের জন্য কারাবাস ভোগ করে তিলে তিলে স্বাস্থ্যক্ষয় করেছেন, এমন কি সৌম্যঠাকুর পর্যন্ত বাদ যান নি, কিন্তু তবু একথা গর্বের সঙ্গে বলা যেতে পারে যে সরকার পক্ষ তিলমাত্রও সফলকাম হতে পারেন নি। এতটুকু কোন সংবাদ কখনও কোনও অসতর্ক মুহূর্তেও সেই একনিষ্ঠ সেবকদের মুখ দিয়ে বার হয় নি। এইখানেই সুভাষবাবুর নেতৃত্বের ও জনপ্রিয়তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন।

 এই রোমাঞ্চকর কাহিনী হয়ত শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ অশ্রুতই রয়ে যেত জগতের কাছে, যদি না আকালী নেতা মাষ্টার তারা সিং সেদিনকার বিবৃতিতে কিছু কিছু সংবাদ প্রকাশ করে দিতেন সে কাহিনী যেকোনও জগতের রোমাঞ্চকর কাহিনীর চেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ। যে বাঙ্গালীর ভীরু, কাপুরুষ আর আরামপ্রিয় বলে বদনাম আছে এ সেই বাঙ্গালী জাতিব মধ্যেই এক আবাল্য ঐশ্বর্য-প্রতিপালিত যুবকের আত্মকাহিনী। হে জগতবাসী সুভাষচন্দ্রের মুখের দিকে—সংহত বাঙ্গালী যৌবনের দিকে চেয়ে সে কথা শোনো। অবশ্য বিশদ বিবরণ আমরা এর থেকে পাবো না কারণ বিশদ বিবরণ সুভাষবাবু নিজেই প্রকাশ করেন নি। তিনি নাকি বলেছিলেন—অবশ্য শোনা কথা—যে, এ পথ তাঁকে ভবিষ্যতে আবার হয়ত গ্রহণ করতে হতে পারে, তাই তিনি সমস্ত প্রকাশ করতে রাজী নন। যাই হোক শিখ নেতা তারা সিং যে খবর আমাদের দিয়েছেন তাই আপাততঃ শুনে আমাদের সন্তুষ্ট হতে হবে।[১]

 তারা সিং বরাবরই সুভাষবাবুর মতের ওপর বিশ্বাসী এবং তিনি সুভাষবাবুকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করেন। তাই সুভাষবাবু যখন ছাড়া পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন তখন তারা সিং তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন। মনে মনে তাঁর তখন এই বিরাট স্বাধীনতা-যজ্ঞের পরিকল্পনা চলছিল। যাই হোক এই সময়ে তিনি তারা সিংএর কাছে বলেন যে এই হচ্ছে সুযোগ। একদিকে বৃটিশ


৮১

  1. এরপর উত্তমচাঁদের কাহিনী প্রকাশিত হয়েছে। পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য।