পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নাকি একবার ভারত থেকে পলায়ন করবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু কৃতকার্য হন নি। এবং তাঁর কারামুক্তির পর নভেম্বর মাসে কোলকাতার নাম করা সাংবাদিক— ‘দেশ দর্পণ’ সম্পাদক সর্দার নিরঞ্জন সিং তালিবের নিকট তাঁর রাশিয়া যাওয়ার সঙ্কল্পের কথা প্রকাশ করেন। তালিব বলেন আচারসিং চিন্না এই বিষয়ে বেশী সাহায্য করতে পারবেন। চিন্না তখন ফতেওয়াল হত্যা মামলায় আত্মগোপন করে বেড়াচ্ছেন। তারপর সুভাষ-তালিব-চিন্না বৈঠকের একটা আয়োজন হয়েছিল। এই বৈঠকে স্থির হয় চিন্না ও তালিব পাঞ্জাবে গিয়ে আকালী ও কমিউনিষ্টদের মধ্যে একটা ঐক্যের চেষ্টা করবেন। তাঁরা দুজনেই পাঞ্জাবে গেলেন এবং কমিউনিষ্ট ও আকালীদের মধ্যে কথাবার্তা চালাতে লাগলেন। স্থির হল কমিউনিষ্টরা সুভাষবাবুকে রাশিয়ায় পাঠাবার ব্যবস্থা করবে আর আকালীরা পাঞ্জাবের গুরুদ্বারের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপাবে কমিউনিষ্টদের আস্থা স্থাপনের যোগ্য হয়ে উঠবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই পরিকল্পনা কার্যে পরিণত হয় নি। ইতিমধ্যে সুভাষবাবু অন্তর্ধান করলেন। এবং এই ব্যাপারে পাঞ্জাবই তাঁকে নানাদিক দিয়ে সাহায্য করলো।

 সত্য মিথ্যা বিচার এবং প্রকৃত তথ্য উদ্ঘাটনের সময় এখনো আসে নি, কিংবা সময এলেও সুযোগ এখনও ঘটেনি তবে সুভাষবাবুর অন্তর্ধান বিষয়ে এই হল একমাত্র খবর। জানা গেছে অধুনা মুক্ত উত্তমচাঁদও নাকি এই ব্যাপারে জড়িত আছেন। তবে একথা অনুমান করা অযৌক্তিক নয় যে সুভাষবাবু স্থলপথে এবং কাবুলের পথেই ভারত ত্যাগ করেছিলেন। আগামী দিনের স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সেই জয়যাত্রার পথের মানচিত্র স্বর্ণাক্ষরে মুদ্রিত থাকবে।

 এ ত গেল যাত্রাপথের বিচ্ছিন্ন ও প্রক্ষিপ্ত কাহিনী। এবার লক্ষ্যের কথা, যাত্রাস্থানের কথা। ১৯৪১ সালের ১০ই নভেম্বর ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব স্মিথ্ ঘোষণা করলেন সুভাষচন্দ্র বার্লিন বা রোমে অবস্থান করছেন। ১৭ তারিখে অক্ষশক্তি পক্ষের বেতারে জানা গেল সুভাষবাবু জার্মাণীতে এসে জার্মান সরকারের

৮৪