পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করে বেড়ানো (৩) নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচার (৪) প্রায় ৫০০০০ শ্রমিককে গৃহহীন করা (৫) সমস্ত জল আলো বন্ধ করে দেওয়া···ইত্যাদি। অথচ, সেন্সারের এমনই কড়া ব্যবস্থা ছিল যে, জগতের কোথাও এ খবর গিয়ে পৌঁছতে পারে নি।

 এদিকে জাপানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছলো। ভেতরে ভেতরে সমস্ত শ্বেতাঙ্গ অধিবাসিদের সরাবার ব্যবস্থা হতে লাগল। ১৯৪১ সালের শেষ দিকে সমস্ত বৃটিশই পালিয়ে গেল মালয় ছেড়ে।[১] আর জাপানীদের সমস্ত আক্রমণের সমস্ত চাপ বহন করবার জন্যে রইল অরক্ষিত হতভাগ্য ভারতীয়েরা। উপরন্তু জল ও আলোর সমস্ত ব্যবস্থা ধ্বংস করে গিয়েছিল বৃটিশেরা। সুতরাং ভারতীয়দের দুর্দশা অবর্ণনীয় রকমের মর্মান্তিক সন্দেহ নাই। কিছু কিছু ভারতীয় সৈন্যও এখানে ছিল।

 জাপানীরা ১৯৪২ সালের ১৫ই জানুয়ারীর মধ্যে সমস্ত মালয় দখল করে বসে। তারা কিন্তু ভারতীয় অধিবাসী ও সৈন্যদের ওপর কোনরকম খারাপ ব্যবহার করেনি! উপরন্তু ভারতের স্বাধীনতার জন্য দল গঠনে সবরকম সাহায্য করেছিল ও সুযোগ সুবিধা দিতে কুণ্ঠিত হয়নি। এমন কি তারা সমস্ত রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্ত করে দেয়।

 এদিকে জাপানে রাসবিহারী বসু ভারত স্বাধীনতা সঙ্ঘ বা Indian Independence League গঠন করে বিবাট এক আন্দোলন কয়েক বৎসর যাবৎ চালনা করছিলেন। এই আই. আই. এলএর অনুকরণে মালয়েতেও লীগ গড়ে উঠলো। জাপানের সহযোগিতায় তাদের শক্তিও দিন দিন বৃদ্ধি পেতে লাগল। তবে সকলেই যে এতে যোগ দিয়েছিল তা নয়। বৃটিশের গুপ্ত সহযোগিতায় গুপ্তচরদের নিয়ে এবং পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে অন্যান্য সাধারণ লোককে নিয়ে এক জাপ-বিরোধী বাহিনীও গড়ে উঠলো। জাপানীরা এদেরও


৮৮

  1. পরিশিষ্ট দ্রষ্টব্য।