পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কোন বাধা দেয়নি। এ বিষয়ে জাপানের মনোভাব সত্যিই বিস্ময়কর। এদের সংখ্যাও নেহাৎ কম ছিল না। তারা রীতিমত মিত্র শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ বেখে কাজ করতো।

 ধীরে ধীরে যখন পূর্ব-এশিয়া জাপানীরা জয় করে ফেললে তখন সারা পূর্ব-এশিয়া জুড়ে ভারত-স্বাধীনতা সঙ্ঘ গড়ে উঠেছে। এই দলের ব্রহ্ম, শ্যাম, মালয়, সাংহাই, ফিলিপিন, কোরীয়া, মাঞ্চুরিয়া, আন্দামান, হংকং, নানকিং ও জাপানের প্রতিনিধিদের নিয়ে রাসবিহারী বসুর সভাপতিত্বে ব্যাংককে এক অধিবেশন বসলো। এই অধিবেশনে সমস্ত পূর্ব-এশিয়া সঙ্ঘের একটা কার্যতালিকা ও কার্যনিবাহক সমিতি গঠন করা হল। সভাপতি হলেন, রাসবিহারী বসু, এবং চারজন সভ্য হলেন: এন, রাঘবন, কে, পি, কে, মেনন, ক্যাপ্টেন মোহন সিং ও কর্ণেল জিলানী। মোহন সিংয়ের ওপর ভার পড়লো সংগঠনের। তিনিই প্রথম আজাদ-হিন্দ-ফৌজ বা জাতীয় সেনা বাহিনী বা Indian National Army গঠন করেন।

 এই দিক দিয়ে এই পাঁচজন বীর সন্তান— আধুনিক যুগের পঞ্চ-পাণ্ডব আমাদেব শ্রদ্ধা ও প্রণামের পাত্র!

 অবশ্য এই বাহিনীর অস্তিত্ব বেশী দিন ছিল না। ওঁরা দেখলেন জাপানের উদ্দেশ্য এই সৈন্যদের দিয়ে তাদের কার্যসিদ্ধি করা। ফলে মোহন সিং ১৯৪২ সালের ডিসেম্বর মাসে এই বাহিনী ভেঙ্গে দিলেন এবং ওঁদের কার্যনির্বাহক সমিতিও ভেঙ্গে গেল। কিন্তু রাসবিহারী বসু তখনও হাল ছাড়েন নি। তিনি একাই শেষপর্যন্ত লীগেব কাজ চালাতে লাগালেন এবং কর্ণেল ভোঁসলে নতুন করে জাতীয়-সেনাবাহিনী গঠন করতে আরম্ভ করলেন।

 ঠিক এই সময়েই সুভাষবাবু জার্মানী থেকে এসে উদয় হলেন টোকিওয়। সূর্য উদয়ের দেশে সূর্য উদিত হলেন পশ্চিম পার হয়ে। সেই সূর্য ক্রমশঃ গড়িয়ে চললো মধ্যাহ্নের দিকে।

৮৯