পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
৮৫

খচ্চর ও গাধা-ঘোড়া এবং তাহাদের সহিসদের দল। ভাগ্যের বিড়ম্বনায় সুভাষচন্দ্র ও ভগৎরাম ওরফে রহমৎ খাঁকেও আজ সেইখানেই আশ্রয় লইতে হইল।

 দিন পাঁচ-ছয় ভাল ভাবেই কাটিয়া গেল। ইহার পরে একদিন রহমৎ আসিয়া সুভাষচন্দ্রকে কহিলেন, “সাদা পোষাকে একটা লোক কাছেই রুটির দোকানে বসিয়া থাকে। সে সর্ব্বদাই আমার দিকে কট্‌মট্‌ করিয়া তাকায়। তাহাকে দেখিয়া আফগান সি. আই. ডি.র লোক বলিয়া মনে হয়।”

 কথার সঙ্গে-সঙ্গেই সেই কনস্টেবলটি তাঁহাদের দরজার সম্মুখে উদয় হইল।

 সে এক মুহূর্ত্ত তীক্ষ্ণভাবে তাঁহাদের দিকে তাকাইয়া রহিল; তারপর পরিচিত পুস্তুভাষায় সতেজে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনারা কে? আর এখানে আসিয়াছেন কেন?”

 রহমৎ খাঁ সুভাষচন্দ্রকে দেখাইয়া কহিলেন, “ইনি আমার বড় ভাই, বোবা ও কালা, এবং অসুস্থ। আমি ইঁহাকে লইয়া সাখি-সাহেবের দরগায় যাইতেছি; কিন্তু অতিরিক্ত তুষারপাত হওয়ায়, সাখি-সাহেবের পথ-ঘাট এখন বন্ধ হইয়া গিয়াছে, কাজেই আমরা এখানে অপেক্ষা করিতেছি।”

 কনষ্টেবলটি কহিল, “আপনাদের কথা সত্য বলিয়া আমার বিশ্বাস হয় না। যাহোক্, আপনারা আমার সঙ্গে কোতোয়ালীতে চলুন।”

 সুভাষচন্দ্র ও রহমৎ খাঁর সমস্ত শরীর ঘামিয়া উঠিল। তাঁহারা ভাবিলেন,—এত পরিশ্রম, এত যত্ন, সবই কি বিফল