পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
৯৩

সি. আই. ডি. বড়ই উৎপাত শুরু করিয়াছে। তাই তিনি আমাকে আপনার নিকট পাঠাইয়াছেন। তাঁহার জন্য যদি একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থলের ব্যবস্থা করিয়া দেন!”

 স্বর্গ হইতে চাঁদ খসিয়া পড়িলেও বুঝি উত্তমচাঁদ ইহা অপেক্ষা বেশী বিস্মিত হইতেন না! অন্তর্হিত সুভাষচন্দ্রের সহসা কাবুলে আবির্ভাবের সংবাদে তিনি এতই বিস্মিত হইলেন!

 উত্তমচাঁদের সমগ্র অন্তঃকরণ আনন্দে ও গৌরবে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল। স্বদেশপ্রেমের জ্বলন্ত প্রতিমূর্ত্তি, ভারতের জাতীয় মহাসভার ভূতপূর্ব্ব রাষ্ট্রপতি, বাংলার পুরুষসিংহ— সুভাষচন্দ্র বসু আজ বিপন্ন হইয়া তাঁহারই নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করিতেছেন! ইহা যে উত্তমচাঁদের পক্ষে কত বড় সৌভাগ্য ও কত বড় গৌরবের কথা, তিনি তাহা সম্পূর্ণভাবে হৃদয়ঙ্গম করিলেন। সুতরাং এই সুযোগ তিনি পরিত্যাগ করিতে পারেন না—তিনি ভগৎরামের এই প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করিলেন।

 তিনি কহিলেন, “বোস্ বাবু আমার এখানে থাকিতে পারিবেন, কিন্তু গুটি কয়েক অসুবিধা আছে। আপনারা উভয়েই আছেন মুসলমানের ছদ্মবেশে। আমি আছি হিন্দু বস্তীতে। এখানে হিন্দুর বাড়ীতে, হিন্দুর বস্তীতে দুজন মুসলমানের বাস করা অনেকটা সন্দেহজনক হইয়া উঠে। কেবল তাহাই নহে, আমি থাকি উপর তলায়; আমার বাড়ীতে নীচের তলায় অন্য একটি ভাড়াটিয়া আছেন। অথচ সেই ভাড়াটিয়ার অজ্ঞাতসারেই আপনাদিগকে বাস করিতে হইবে।