পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 বিগত ১৯৪৩ খৃষ্টাব্দের ২৮শে ডিসেম্বর তারিখে শরৎচন্দ্র ও সুভাষচন্দ্রের জননী প্রভাবতী দেবী ছিয়াত্তর বৎসর বয়সে হিন্দুর চির-আকাঙ্ক্ষিত স্বর্গে গমন করিয়াছেন।

 পাঁচ বৎসর বয়সে সুভাষচন্দ্র কটকের প্রটেষ্টাণ্ট ইয়োরোপীয়ান্‌ স্কুলে ভর্ত্তি হন। এই বিদ্যালয়ে তিনি দ্বাদশ বৎসর বয়স পর্য্যন্ত অধ্যয়ন করিয়াছিলেন।

 সুভাষচন্দ্রের বাল্য-জীবনের এই ছয়-সাত বৎসর, সমগ্র জীবনের অতি সামান্য অংশ হইলেও, চরিত্র-গঠনে ইহা তাঁহাকে নিতান্ত কম সাহায্য করে নাই। পাশ্চাত্ত্য মানব-চরিত্রের দোষ-গুণ তিনি অতি মনোযোগর সঙ্গেই লক্ষ্য করিতে পারিয়াছিলেন। পাশ্চাত্ত্যের সজীবতা ও নিজেদের জড়তা তিনি নিজের অন্তরে অনুভব করিয়া ক্ষুন্ন হইয়া পড়িতেন। আর সঙ্গে-সঙ্গে সমস্ত দুর্ব্বলতা, গ্লানি ও অপমান এক মুহূর্ত্তে দূরে নিক্ষেপ করিয়া সিংহ-বিক্রমে জগতে দণ্ডায়মান হইবার আকাঙক্ষায় অনুপ্রাণিত হইয়া উঠিতেন! আর তখন হইতেই কি এক দৃঢ় সঙ্কল্পের নির্ম্মম গুরুভার তাঁহার ভবিষ্যৎ জীবনের সুপ্ত ভাবরাশিকে মহানদীর তরঙ্গ-কল্লোলে প্রতিধ্বনিত করিয়া, তাঁহাকে উন্মনা করিয়া তুলিত!

 সুভাষচন্দ্র বাক্যকাল হইতে চিন্তাশীল ছিলেন। বিদ্যাশিক্ষার প্রতি তাঁহার অনুরাগও বাল্যকাল হইতেই পরিলক্ষিত হইত। লেখাপড়ার জন্য তাঁহাকে কোনদিন কোনরূপ তাড়না করিতে হয় নাই। স্বাভাবিক সংস্কার-বশেই যেন তিনি পাঠ্য পুস্তক লইয়া বসিতেন!