পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০২
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

করে। তাহাদের পলায়নের জন্য সকল প্রকার ব্যবস্থা পূর্ব্বেই করা হইয়াছিল; কিন্তু ভারতীয় সৈন্যগণকে কিছু না জানাইয়া তাহাদিগকে অনিশ্চিত ভাগ্যের উপর ফেলিয়া রাখা হয়। ইহার ফলে সিঙ্গাপুরের সমস্ত ভারতীয় সৈন্য বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণ করে।

 সিঙ্গাপুরের পতনের সঙ্গে-সঙ্গেই—১৬ই ফেব্রুয়ারী তারিখে সন্ধ্যাবেলা সমগ্র ভারতীয় বাহিনীর মধ্য হইতে ব্রিটিশ অফিসারদিগকে পৃথক্ করা হইল এবং ব্রিটিশ কম্যাণ্ডিং অফিসার স্বদেশীয় সৈন্যদিগকে নিরাপদে অন্যত্র পাঠাইবার জন্য ব্যস্ত হইয়া পড়িলেন; কিন্তু হতভাগ্য ভারতীয় অফিসার ও সৈন্যদিগকে ১৭ই তারিখে প্রাতঃকালে ফেরার পার্কের দিকে মার্চ্চ করিয়া লইয়া যাওয়া হইল।

 লেঃ কর্ণেল হাণ্ট সেখানে হতভাগ্য ভারতীয় সৈন্যদিগকে জাপ-গভর্ণমেণ্টের প্রতিনিধি মেজর ফুজিয়ারার হস্তে সমর্পণ করিয়া তাহাদিগকে চূড়ান্তভাবে বলিয়া দিলেন, “তোমরা এতদিন আমাদিগকে যেভাবে মানিয়াছ, এখন হইতে জাপ-কর্ত্তৃপক্ষকে মান্য করিয়া চলিও।”

 তৎকালীন অবস্থা বর্ণনা-প্রসঙ্গে ক্যাপ্টেন সাইগল বিচারকালে তাঁহার জবানবন্দীতে বলিয়াছিলেন, “ব্রিটিশের পক্ষ হইতে লেঃ কর্ণেল হাণ্ট ভারতীয় অফিসার ও সৈন্যদিগকে একদল ভেড়ার মতই জাপদের হাতে সঁপিয়া দিলেন।”

 মেজর ফুজিয়ারা অসহায় যুদ্ধবন্দী ভারতীয় সৈন্যদের মানসিক অবস্থা স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করিতে পারিলেন।