পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 ভারতব্যাপী দাবানল জ্বলিয়া উঠিল, ভারতবর্ষের সমস্ত কংগ্রেস-নেতাকে তড়িৎ আক্রমণ হানিয়া ব্রিটিশ শক্তি কারারুদ্ধ করিল; সহস্র-সহস্র কংগ্রেসকর্ম্মী ও জনগণ ব্রিটিশের গুলিতে প্রাণ বিসর্জ্জন দিতে লাগিলেন; ব্রিটিশ বিমান হইতে বোমাবর্ষণ করিয়া গ্রাম, নগর ধ্বংস করিতে লাগিল।

 এই সকল সংবাদে পূর্ব্ব-এশিয়ার সর্ব্বত্র অভূতপূর্ব্ব চাঞ্চল্য এবং অদম্য কর্ম্মোৎসাহ চূড়ান্ত সীমায় ঠেলিয়া উঠিল। এই চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতিতে এইবার সর্ব্বপ্রথম ক্যাপ্টেনমোহন সিংএর অধিনায়কত্বে আজাদ-হিন্দ ফৌজের গঠন-কার্য্য আরম্ভ হইল। মালয়ে যে সকল ভারতীয় সৈন্য আত্মসমর্পণ করিয়াছিল, তাহাদের লইয়াই বাহিনী গঠনের প্রাথমিক কর্ম্মসূচী অনুসৃত হইতে লাগিল; মালয়-প্রবাসী ভারতীয়গণের নিকট আবেদন জানাইলে আশাতিরিক্ত সাড়া পাওয়া যাইতে লাগিল।

 ভারতীয়গণের এই স্বাধীন প্রচেষ্টা জাপান কিছুতেই প্রীতির চক্ষে দেখিতে পারে নাই। ইহাতে বরং সাম্রাজ্যবাদী জাপানের মনেও আতঙ্ক এবং ভীতির সঞ্চার হইয়াছিল। সুতরাং জাপানী কর্ত্তৃপক্ষের সহিত আজাদ-হিন্দ ফৌজের কর্ম্ম-পরিষদের সংঘর্ষ বাধিয়া উঠিল। প্রধানতঃ দুইটি কারণে তিক্ততা চরম হইয়া পড়িল—

 (১) কর্ম্ম-পরিষদ দাবী জানাইয়াছিলেন যে, ভারতবর্ষ, পূর্ব্ব-এসিয়া এবং আজাদ হিন্দ সঙ্ঘের প্রতি জাপানের নীতি কি, ইহা জাপান অবিলম্বে ঘোষণা করুক।