পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩১
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 ভারতবর্ষে আজাদ-হিন্দ ফৌজের প্রথম বিচার-পর্ব্বের পূর্ব্ব পর্য্যন্ত স্বদেশে ও বিদেশে সুভাষচন্দ্র সম্বন্ধে হয় তো বা একটা বিরুদ্ধ অভিমত বর্ত্তমান ছিল! তখন পর্য্যন্ত কেহ হয় তো মনে করিতেন, সুভাষচন্দ্র এক শত্রুকে বিতাড়িত করিবার জন্য অপর এক বিদেশী শত্রুকে আমন্ত্রণ করিয়া আনিতেছিলেন; সুতরাং জয়চাঁদের সঙ্গেই তিনি তুলনীয়, এবং তাঁহার সৈন্যবাহিনী বিভীষণ-বাহিনী ছাড়া আর কিছুই নহে। কিন্তু সুখের বিষয়, ক্যাপ্টেন শা নওয়াজ, ক্যাপ্টেন সাহগল ও লেফ টেন্যাণ্ট ধীলনের বিচারকালেই প্রমাণিত হইয়াছে যে, সুভাষচন্দ্রের আজাদ-হিন্দ গভর্ণমেণ্ট ও আজাদ-হিন্দ ফৌজ একেবারেই জাপানের তাঁবেদার ছিল না,—এবং সেইজন্যই সুভাষচন্দ্রকে জাপানীদের সঙ্গে অবিরতই দৃঢ় ভাবে ও সুকৌশলে দ্বন্দ করিতে হইয়াছে। সুতরাং আজাদ-হিন্দ ফৗজের বিচারে এইটুকুই দেশবাসীর লাভ।

 সমগ্র জগৎ আজ বুঝিয়া লইয়াছে, সুভাষচন্দ্রের ন্যায় দ্বিতীয় ব্যক্তি পৃথিবীতে অদ্যাপি জন্মগ্রহণ করেন নাই। পলায়নের অপমান-পঙ্কিল কালিমার মধ্য হইতে তিনি যে বিজয়-গৌরব অর্জ্জন করিয়াছেন, সেই অনুভূতি আজ পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ, জরাজীর্ণ ভারতবর্ষকে স্বাধীনতার স্বপ্ন-জলুষে মহিমোজ্জ্বল করিয়া তাহার লাঞ্ছিত নত মস্তকে তারুণ্যের কিরীট পরাইয়া দিয়াছে।