পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিত তাঁহার পাণ্ডিত্য-খ্যাতি, সুন্দরী স্ত্রী, স্নেহশীলা জননী প্রভৃতি ত্যাগ করিয়া নীলাচলের পথে-পথে গাহিয়া বেড়াইতেন

“ন ধনং, ন জনং, ন সুন্দরীং, কবিতাং বা জগদীশং কাময়ে”—

সুভাষচন্দ্রের প্রাণেও সে রহস্য-মীমাংসার চিন্তা সমুদিত হইল, সে ভূমানন্দ লাভের আকাঙ্ক্ষা জাগরিত হইল।

 তিনি আর গৃহে থাকিতে পারিলেন না—আত্মীয়-স্বজনের অজ্ঞাতসারে সদ্‌গুরু লাভ করিয়া জীবন কৃতার্থ করিবার অভিপ্রায়ে গৃহত্যাগ করিয়া প্রব্রজ্যা অবলম্বন করিলেন। ভারতের বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রে পরিভ্রমণ করিয়া জটাজুট-বিমণ্ডিত বিভূতি-ভূষিত সন্নাসি-মহলে তিনি সদ্‌গুরুর অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। কিন্তু বিধাতা তাঁহাকে বুদ্ধ, চৈতন্য, কবির, নানক, তুলসীদাস, বিজয়কৃষ্ণ প্রভৃতি মহাপুরুষগণের পদধূলি-বিরঞ্জিত ক্ষুণ্ণ মার্গে বিচরণ করিবার জন্য সৃষ্টি করেন নাই—তাঁহার কর্ম্মক্ষেত্র ছিল সম্পূর্ণ বিভিন্ন। পর-পদানতা শৃঙ্খলিতা স্বদেশ-জননী যেন মলিন-বদনে তাঁহারই মুখের দিকে কাতর ভাবে দৃষ্টিপাত করিয়া ছিলেন! সেই জন্য তিনি গৃহত্যাগী সন্ন্যাসীর দলে মিশিয়াও ঠিক মনের মত গুরুর দর্শন পাইলেন না। সুতরাং তিনি গৃহে ফিরিয়া সুবােধ বালকের ন্যায় আবার পাঠ্য পুস্তকে মনঃসংযোেগ করিলেন।

 ১৯১৫ খৃষ্টাব্দে তিনি আই. এ. পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং দর্শন শাস্ত্রে অনার্স লইয়া প্রেসিডেন্সী কলেজেই বি. এ. পড়িতে থাকেন।