পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
নেতাজী সুষচন্দ্র

সহ্য করিতে পারিলেন না। সেই বৎসরই মে মাসে পুণায় যে মহারাষ্ট্র প্রাদেশিক কন্‌ফারেন্স হয়, তিনি তাহাতে সভাপতিত্ব করিবার কালে মহাত্মার এই নিষ্ক্রিয়তার তীব্র সমালোচনা করেন। মহাত্মার চিন্তাধারা ও কার্য্যপদ্ধতির সহিত তিনি যে একমত হইতে পারিতেছেন না, প্রকাশ্য জনসভায় সম্ভবতঃ এই তাঁহার প্রথম অভিব্যক্তি!

 সেই বৎসরই ডিসেম্বর মাসে কলিকাতায় ভারতীয় জাতীয় মহা-সমিতির ত্রিচত্বারিংশৎ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই সময় সুভাষচন্দ্র পুনরায় স্বেচ্ছাসেবক-বাহিনী সংগঠনে আত্মনিয়োেগ করিলেন এবং স্বয়ং স্বেচ্ছাসেবক-বাহিনীর জেনারেল-অফিসার-কম্যাণ্ডিং-রূপে জাতীয় মহাসমিতির নির্ব্বাচিত সভাপতি পরলোকগত পণ্ডিত মতিলাল নেহেরুকে বিরাট শোভাযাত্রায় সম্বর্দ্ধনা করেন।

 কংগ্রেসের এই অধিবেশনে মহাত্মার মতবাদের সহিত সুভাষচন্দ্রের পুনরায় প্রকাশ্য বিরোধিতা হইল। কারণ, মহাত্মা গান্ধীর প্রস্তাব ছিল আপোষ-মীমাংসার প্রস্তাব; কিন্তু দেশপ্রেমের মূর্ত্ত আগ্নেয়গিরি সুভাষচন্দ্রের পক্ষে ব্রিটিশ রাজের অধীনে স্বায়ত্বশাসনের অধিকার লইয়া তৃপ্ত ভাবে অবস্থান করা, একেবারেই ছিল অসম্ভব। স্বাধীনতা—পূর্ণ স্বাধীনতাই ছিল তাঁহার লক্ষ্য; কংগ্রেসকে তিনি সেই ভাবেই অনুপ্রাণিত দেখিতে আশা করিয়াছিলেন; কিন্তু তাহাতে হতাশ হইয়া তিনি মহাত্মা গান্ধীর আপোষ-মীমাংসা প্রস্তাবের জ্বলন্ত ভাষায় প্রতিবাদ করেন।