পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 ১৯৩০ খৃষ্টাব্দের ২৩শে সেপ্টেম্বর রাত্রিকালে সুভাষচন্দ্রকে আলিপুর সেণ্ট্রাল জেল হইতে মুক্তিদান করা হয়। তৎপরদিবস তিনি অল্‌ডারম্যানের বিশ্বস্ততার শপথ গ্রহণ করেন, এবং তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে মেয়রপদে অধিষ্ঠিত হন। তাঁহার মেয়র-পদলাভে কলিকাতা কর্পোরেশনের সর্ব্বত্র একটা আনন্দের ও উৎসাহের বন্যা প্রবাহিত হইয়াছিল।

 মেয়র-পদে অধিষ্ঠিত হইবার পর অভিনন্দন-সূচক বক্তৃতাবলীর অবসানে, মেয়র সুভাষচন্দ্র প্রত্যুত্তরে বলেন—

 “প্রথম মেয়রের প্রথম বক্তৃতাই মিউনিসিপ্যাল টেষ্টামেণ্ট বা ধর্ম্মপুস্তক-স্বরূপ হইবে; দেশবন্ধুর কর্ম্ম-পদ্ধতি ছিল-দরিদ্র-নারায়ণের সেবা, অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যপ্রদ বাসগৃহ প্রদান। এই সমস্তই দরিদ্রের পক্ষে আশীর্ব্বাদ-স্বরূপ। এতদ্ভিন্ন স্বল্প ব্যয়ে বিশুদ্ধ পুষ্টিকর খাদ্য ও দুগ্ধ-সরবরাহ, শোধিত ও অশোধিত জল-সরবরাহের প্রাচুর্য্য, জনাকীর্ণ ও বস্তি-অঞ্চলে স্বাস্থ্যরক্ষার উৎকৃষ্টতর ব্যবস্থা অবলম্বন, যানবাহনের উন্নতি-বিধান—এই সমস্তও তাঁহার কার্য্য-তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল।

 কর্পোরেশনেই ইয়োরোপীয় ফ্যাসিজম্ ও সোশ্যালিজ্‌মের সমন্বয় সাধিত হইয়াছে। একদিকে ন্যায়, সাম্য ও মৈত্রী, ইহারা সোশ্যালিজ্‌মের প্রতীক; অন্যদিকে সংযম ও কর্ম্মদক্ষতা—এই দুইটি ফ্যাসিজ্‌মের প্রতীক; প্রকৃত পক্ষে সোশ্যালিজ্‌মের এবং ফ্যাসিজ্‌মের অপূর্ব্ব সমন্বয়—এই কর্পোরেশন।”

 ১৯৩০ খৃষ্টাব্দের ১৩ই নভেম্বর সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে কলিকাতা কর্পোরেশনের এক সভায় তদানীন্তন গোলটেবিল-বৈঠকের তীব্র নিন্দা করা হয়। কারণ, গোলটেবিল-বৈঠক