১৯৩০ খৃষ্টাব্দের ২৩শে সেপ্টেম্বর রাত্রিকালে সুভাষচন্দ্রকে আলিপুর সেণ্ট্রাল জেল হইতে মুক্তিদান করা হয়। তৎপরদিবস তিনি অল্ডারম্যানের বিশ্বস্ততার শপথ গ্রহণ করেন, এবং তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে মেয়রপদে অধিষ্ঠিত হন। তাঁহার মেয়র-পদলাভে কলিকাতা কর্পোরেশনের সর্ব্বত্র একটা আনন্দের ও উৎসাহের বন্যা প্রবাহিত হইয়াছিল।
মেয়র-পদে অধিষ্ঠিত হইবার পর অভিনন্দন-সূচক বক্তৃতাবলীর অবসানে, মেয়র সুভাষচন্দ্র প্রত্যুত্তরে বলেন—
“প্রথম মেয়রের প্রথম বক্তৃতাই মিউনিসিপ্যাল টেষ্টামেণ্ট বা ধর্ম্মপুস্তক-স্বরূপ হইবে; দেশবন্ধুর কর্ম্ম-পদ্ধতি ছিল-দরিদ্র-নারায়ণের সেবা, অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষা, বিনা ব্যয়ে চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যপ্রদ বাসগৃহ প্রদান। এই সমস্তই দরিদ্রের পক্ষে আশীর্ব্বাদ-স্বরূপ। এতদ্ভিন্ন স্বল্প ব্যয়ে বিশুদ্ধ পুষ্টিকর খাদ্য ও দুগ্ধ-সরবরাহ, শোধিত ও অশোধিত জল-সরবরাহের প্রাচুর্য্য, জনাকীর্ণ ও বস্তি-অঞ্চলে স্বাস্থ্যরক্ষার উৎকৃষ্টতর ব্যবস্থা অবলম্বন, যানবাহনের উন্নতি-বিধান—এই সমস্তও তাঁহার কার্য্য-তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কর্পোরেশনেই ইয়োরোপীয় ফ্যাসিজম্ ও সোশ্যালিজ্মের সমন্বয় সাধিত হইয়াছে। একদিকে ন্যায়, সাম্য ও মৈত্রী, ইহারা সোশ্যালিজ্মের প্রতীক; অন্যদিকে সংযম ও কর্ম্মদক্ষতা—এই দুইটি ফ্যাসিজ্মের প্রতীক; প্রকৃত পক্ষে সোশ্যালিজ্মের এবং ফ্যাসিজ্মের অপূর্ব্ব সমন্বয়—এই কর্পোরেশন।”
১৯৩০ খৃষ্টাব্দের ১৩ই নভেম্বর সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে কলিকাতা কর্পোরেশনের এক সভায় তদানীন্তন গোলটেবিল-বৈঠকের তীব্র নিন্দা করা হয়। কারণ, গোলটেবিল-বৈঠক