পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
৪৩

 প্রসঙ্গতঃ তিনি পাশ্চাত্ত্য লেখকগণের ভ্রান্ত ধারণার কথা উল্লেখ করিয়া বলেন যে, তাঁহাদের মতে পুরাকালে ভারতবর্ষে গণতন্ত্র বা স্বায়ত্তশাসনমূলক কোন প্রতিষ্ঠান ছিল না।

 পাশ্চাত্ত্য পণ্ডিতগণের এই ধারণা যে ভ্রান্তিমূলক, তাহা প্রাচ্য পণ্ডিতগণের গবেষণায় প্রমাণিত হইয়াছে। তাঁহারা প্রমাণ করিয়াছেন যে, প্রকৃত প্রস্তাবে ভারতবর্ষ গণতন্ত্র ও স্বায়ত্তশাসন-মুলক প্রতিষ্ঠানের সহিত বিশেষ পরিচিত ছিল।

 তাহাদের আর একটি অভিমত যে, নাগরিক জীবনের সহিত রাষ্ট্রনীতির কোন সম্পর্ক ছিল না;কিন্তু তাহা সম্পূর্ণ অসম্ভব। এই সময় সুভাষচন্দ্র দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের উল্লেখ করিয়া বলেন যে, দেশবন্ধুর মতে নাগরিক শাসন ও রাষ্ট্রশাসনকে জলরোধী কক্ষের মত পৃথক করা সম্ভব নহে; উভয়কে একটি অখণ্ড বস্তু বলিয়া ধরিতে হইবে। পরিশেষে তিনি বলেন যে, মিউনিসিপ্যালিটি সাহায্য করিলে জাতীয়তার প্রতি কর্ত্তব্য সম্পাদিত হইতে পারে; সুতরাং জাতীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে রক্ষা করা এবং সহস্র-সহস্র নূতন জাতীয় প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তোলা মিউনিসিপ্যালিটির কার্য্য।

 সুভাষচন্দ্রের এই বক্তৃতায়ও সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, পরাধীনতাকে তিনি কত বড় একটা দুর্ভাগ্য বলিয়া মনে করিতেন এবং জাতীয় কার্য্যের জন্য তাঁহার সমস্ত অন্তঃকরণ কতদিকে উন্মুখ হইয়া থাকিত!