পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

করিয়াছেন। বিভিন্ন দেশের লোকমান্য লব্ধ প্রতিষ্ঠ চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গ শতমুখে এই গ্রন্থের প্রশংসা করিয়াছেন। দুঃখের বিষয়, এই গ্রন্থেরও ভারতে আগমন নিষিদ্ধ।

 ১৯৩৪ খৃষ্টাব্দের শেষ দিকে জানকীনাথ বসু মহাশয় অত্যন্ত অসুস্থ হইয়া পড়েন। সুভাষচন্দ্র চিরস্নেহময় পিতার অসুস্থতার সংবাদে স্থির থাকিতে পারিলেন না। তিনি ৩রা ডিসেম্বর তারিখে গভর্ণমেণ্টের বিনা অনুমতিতেই আকাশযানে ইয়োরোপ হইতে করাচি উপনীত হইলেন। কিন্তু দুঃখ এবং দুর্ভাগ্যের বিষয়—করাচি পৌঁছিয়াই তিনি পিতার মৃত্যু সংবাদ পাইলেন। তাঁহার দুঃখ রাখিবার স্থান রহিল না। পিতার মৃত্যুকালে তাঁহার দর্শনে বঞ্চিত হওয়া যে কি শোকাবহ ঘটনা, তাহা ভুক্তভোগী ব্যতীত অপরে ঠিক হৃদয়ঙ্গম করিতে পারিবে না।

 শোক-ব্যথিত হৃদয় লইয়া তিনি কলিকাতায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। দম্‌দম্-এরোড্রোমে তাঁহার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হইল যে, তাঁহাকে সরাসরি এলগিন রোডের বাড়ীতে যাইতে হইবে এবং নিজ গৃহে বন্দী ভাবে বাস করিতে হইবে; পরে, সাত দিনের মধ্যে ভারতবর্ষ ত্যাগ করিতে হইবে—এই মর্ম্মে অপর একটি নিষেধাজ্ঞা তাঁহার উপর জারি করা হইল। অবশেষে পিতার শ্রাদ্ধাদি কার্য্য নিষ্পন্ন না হওয়া পর্য্যন্ত তাঁহাকে অবস্থান করিবার অনুমতি দেওয়া হয়।

 পিতৃশ্রাদ্ধের অবসানে সুভাষচন্দ্রকে আবার বিধবা জননী ও দুঃখিনী জন্মভূমির নিকট বিদায় গ্রহণ করিয়া ১৯৩৫