পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভারতীয় জাতীয় মহা-সমিতির সভাপতি

‘হরিপুরা’-কংগ্রেস ১৯৩৮—‘ত্রিপুরী’-কংগ্রেস ১৯৩৯—প্রতিযোগিতা—জয়লাভ—মহাত্মার ক্ষোভ—হলওয়েল মনুমেণ্ট অপসারণ—সুদীর্ঘ হাজত-বাস—মুক্তি—নিরুদ্দেশ।

ইংলণ্ডে অবস্থিতি-কালে সুভাষচন্দ্র ভারতীয় জাতীয় মহাসমিতির এক-পঞ্চাশত্তম ‘হরিপুরা’-অধিবেশনের সভাপতি নির্ব্বাচিত হইলেন।

 ভারতীয় জাতীয় মহা-সমিতির সভাপতিরূপে তিনি যে অভিভাষণ প্রদান করেন, তাহাতে তাঁহার দৃূরদৃষ্টি, সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ-শক্তি ও পাণ্ডিত্য পূর্ণমাত্রায় প্রকটিত। এই অভিভাষণে তিনি প্রথমেই সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন লইয়া আলোচনা করিয়াছেন। তিনি বলিতেছেন—

 “মানবের ইতিহাসের প্রতি প্রাথমিক দৃষ্টিপাতেই সাম্রা্জের উত্থানপতন আমাদিগকে আকর্ষণ করে। কি প্রাচ্যে, কি পাশ্চাত্যে, সর্ব্বত্রই সাম্রাজ্য প্রথমে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতে থাকে; পরে উন্নতির সর্ব্বোচ্চ শিখর অধিগত করিয়া ধীরে ধীরে হীনাবস্থায় নিপতিত হয় এবং কখনো কখনো মৃত্যুর আলিঙ্গনে লুপ্ত হইয়া যায়। পাশ্চাত্ত্যে প্রাচীন রোম-সাম্রাজ্য এবং বর্ত্তমান কালের তুর্কী-সাম্রাজ্য ও অষ্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য এই নিয়মের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত; ভারতবর্ষেও মৌর্য্য, গুপ্ত এবং মোগলসাম্রাজ্য ইহার ব্যতিক্রম নহে। ইতিহাসের এই সমস্ত বাস্তব ঘটনার প্রতি লক্ষা করিয়া কেহ কি সাহসের সহিত বলিতে পারেন যে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভাগ্যে অন্য়রূপ বিধান রহিয়াছে?[১]


  1. In the face of these objective facts of history, can any one be so bold as to maintain that there is in store a different fate for the British Empire?”
     The Calcutta Municipal Gazette, Vol. XLII, No. 16, P.