পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
৫৯

মান-অভিমান ও ঈর্ষ্যা-বিদ্বেষই যখন জাতীয় ঐক্যবোধকে অভিভূত করিয়া রাখিল, সুভাষচন্দ্র তখন পদত্যাগ করাই সমীচীন মনে করিয়া পদত্যাগপত্র দাখিল করিলেন। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁহার স্থলে সভাপতি নির্ব্বাচিত হইলেন ডাঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ!

 সুভাষচন্দ্র বুঝিলেন, জাতীয় জীবনের মূর্ত্ত বিকাশ কংগ্রেসকে বিপ্লবী প্রতিষ্ঠানরূপে গড়িয়া তুলিবার যে কল্পনা এতদিন তিনি করিয়া আসিতেছিলেন, তাহা চূর্ণ হইয়া গিয়াছে। মহাত্মাজী যতদিন অসহযোগ-আন্দোলনের পক্ষপাতী ছিলেন, সুভাষচন্দ্র কেবল ততদিনই তাঁহার সহিত মিশিয়া চলিতে পারিতেছিলেন। কিন্তু মহাত্মাজী ও তাঁহার অনুবর্ত্তী কংগ্রেস এখন আর কোন সংগ্রামের পক্ষপাতী নহেন; অথচ তিনি নিজে বিশ্বাস করেন, আপোষ-বিহীন সংগ্রাম ব্যতীত কখনও স্বাধীনতা লাভ হইবে না। সুতরাং তিনি নির্জ্জীব ও নিষ্কর্ম্মার ন্যায় বসিয়া না থাকিয়া ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ (Forward Block) নামে এক সংগ্রাম-পন্থী কর্ম্মিদল গঠন করিলেন।

 আজ মনে হয়, ত্রিপুরী-অধিবেশন উপলক্ষে কংগ্রেসের উর্দ্ধতন কর্ত্তৃপক্ষ সুভাষচন্দ্রকে ভূলুণ্ঠিত করিবার জন্য যে সঙ্ঘবদ্ধ জঘন্য আয়োজন করিয়াছিলেন, যাহার ফলে সুভাষচন্দ্রের ‘ফরওয়ার্ড ব্লক’ সৃষ্টি এবং অব্যবহিত পরেই কংগ্রেস-কর্ত্তৃপক্ষ-কর্ত্তৃক কংগ্রেস হইতে তিন বৎসরের জন্য তাঁহাকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা,—এ সমস্তই বুঝি দেশের মঙ্গলের জন্যই হইয়াছিল!