পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

জগৎ স্বভাবতঃই প্রাচীনের চরণে শ্রদ্ধানত হইয়া পড়ে। সুতরাং কর্পোরেশনেও অতি অল্প দিনের মধ্যে তাহাই আত্মপ্রকাশ করিল। শ্রীযুক্ত বিজয়বাবু লিখিয়াছেন:—

 “কর্পোরেশনে একদল লোক ধুয়া ধরিয়া ফেলিল। বলিল, রাধাও নাচিবে না, তেলও পুড়িবে না, অর্থাৎ লক্ষ টাকায় জাতীয় ভবনও হইবে না, ভারতীয় জাতীয় বাহিনীও হইবে না,—টাকাগুবি গান্ধী-মারণ যজ্ঞে ঘৃতাহুতি দিতেই শেষ হইয়া যাইবে।”


 সুতরাং তাহারা আইনের প্যাঁচে ফেলিয়া কর্পোরেশনের প্রধান কর্ম্মকর্ত্তাকে আটকাইয়া ফেলিলেন, আর শেষ মুহূর্ত্তে আসিল হাইকোর্টের ইঞ্জাংশন্! কাজেই লক্ষ টাকার চেক্ আর কোনদিনই সুভাষচন্দ্রের হস্তগত হইল না—আর তাহার ফলে সেই কংগ্রেস-ভবন বা জাতীয় ভবন—গুরুদেবের প্রদত্ত নামে যাহা ‘মহাজাতি-সদন’ নামে পরিচিত হইয়াছিল,—আজও তাহা অসমাপ্ত ও অবজ্ঞাত অবস্থায় কলিকাতা মহানগরীর বুকে জাতীয় ঈর্য্যা বিদ্বেষ ও ষড়যন্ত্রের মূর্ত্ত সাক্ষ্যের ন্যায় দণ্ডায়মান।

 বিগত যুগের ‘মহাজাতি-সদনের’ এই মর্ম্মভেদী করুণ ইতিহাস এস্থলে অপ্রাসঙ্গিক হইলেও আমাদের বলিবার উদ্দেশ্য এই যে, সুভাষচন্দ্র চিরদিনই কত স্বপ্ন দেখিয়া আসিয়াছেন।

 বাংলার বুকে একটা জাতীয় ভবন হইবে, জাতীয় বাহিনী গড়িয়া উঠিবে, সামরিক শিক্ষাকেন্দ্র হইবে, ইহাই না তাঁহার সেদিনের স্বপ্ন ছিল?