পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৯৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
৮১

 সুভাষচন্দ্র তখন ছদ্মবেশে জিয়াউদ্দিন; রহমৎ খাঁও প্রকৃতপক্ষে ভগৎরাম। সুতরাং দুইটি ছদ্মবেশী লোকের পক্ষে কি খানাতল্লাসীর সম্মুখীন হওয়া চলে? কাজেই তাঁহারা চিন্তিত হইলেন।

 পেশোয়ার হইতে ৫০ মাইল দূরবর্ত্তী এক গ্রামের নাম ‘ডাকা’। ‘ডাকা’য় তল্লাসীর হিড়িকটা খুব বেশী, অবশ্য মাঝপথে—পেশোয়ার ও ডাকার মাঝখানে কয়েক স্থানে যাত্রীদিগকে তল্লাসী করা হয়। সুভাষচন্দ্র ও ভগৎরাম অনেকটা ঘুরপথে চলিতেন, অনেকটা বেশী পথ হাঁটিতেন, তথাপি তাঁহারা সহজে খানাতল্লাসীর সম্মুখীন হইতেন না।

 ‘ঠাণ্ডী’ নামক এক জায়গায় আসিয়া তাঁহারা কাবুল যাইবার জন্য বাসের অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। সুভাষচন্দ্র ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত দেহে এক গাছের তলায় বিশ্রাম করিতে লাগিলেন, আর রহমৎ খাঁ যখনই যে বাস্ দেখিতে ছিলেন, তখনই তাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করিবার জন্য হাত নাড়িতেছিলেন।

 বহু চেষ্টায়, অবশেষে এক লরীতে তাঁহাদের স্থান হইল—তাঁহারা উঠিয়া বসিলেন।

 জানুয়ারী মাস—শীত তখন নিদারুণ। বিশেষতঃ আফগান-রাজ্যের সেই শীত,—তাহার কল্পনা করাও কঠিন। সারা মাঠ তখন তুষারে সাদা হইয়া গিয়াছে! তবু—তাহারই মধ্য দিয়া, সেই তুষার-রাজ্য ভেদ করিয়া, সারা দিন, সারা রাত লরী ছুটিয়া চলিল।