পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের বর্ত্তমান গুর্খা রাজগণ।
৯৭

 জঙ্গ বাহাদুর ইংলণ্ড হইতে প্রত্যাবর্ত্তন করিয়া অশেষ প্রকারে নেপালের উন্নতি সাধনে মনোযোগী হইলেন। তিনি শাসন বিভাগে অনেক প্রকার সংস্কার আনয়ন করেন। পূর্ব্বে চৌর্য্যঅপরাধে অপরাধী ব্যক্তিকে নানা প্রকার নিষ্ঠুর উপায়ে অপরাধ স্বীকার করান হইত। হস্ত পদ নাসা প্রভৃতি কর্ত্তন করিয়া অপরাধী ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হইত। জঙ্গবাহাদুর এ সকল শাস্তির ব্যবস্থা সম্পূর্ণ রহিত করিয়া দেন। নেপালে সহমরণ প্রথাও এই সময় নিষিদ্ধ হয়। সুরেন্দ্র বিক্রমের পুত্র শাহাজাদা ত্রৈলোক্য বিক্রমের সহিত আপনার তিনটি কন্যার বিবাহ দেন। পৃথ্বীবীর বিক্রমশাহ তাঁহার মধ্যমা কন্যার গর্ভজাত ছিলেন। সুরেন্দ্র বিক্রমের জীবদ্দশায়ই ত্রৈলোক্য বিক্রম পরলোকগমন করেন। জঙ্গবাহাদুর চিরদিনই ভারতের ব্রিটীশ গবর্ণমেণ্টের সহিত বন্ধুতা রক্ষা করিয়া আসিতেছিলেন। ইংলণ্ড গমনের পর ব্রিটীশ রাজ্যের সহিত তাঁহার হৃদ্যতা আরও ঘণীভূত হয়। কাটমণ্ডুর ব্রিটীশ রেসিডেণ্টের সহিত তিনি সর্ব্বদাই সদ্ভাবে যাপন করিয়াছেন। বাস্তবিক জঙ্গবাহাদুর একজন অসাধারণ পুরুষ ছিলেন। তাঁহার ন্যায় সাহসী উদ্‌যোগী পরিশ্রমী পুরুষ বর্ত্তমান সময়ে দুর্লভ! এরূপ শ্রুত হওয়া যায় যে কেহ তাঁহার চক্ষে কখন জল দেখে নাই। তাঁহার আজ্ঞা তিলমাত্র অবহেলা করে এমন সাহস কাহারও ছিল না। অসমসাহসিক যে কোন কার্য্যে তাঁহার অত্যন্ত উৎসাহ ছিল। বনের বাঘ, দুরন্ত বন্যহস্তী বশীভূত করা তাঁহার নিকট অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার ছিল।