পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের আদর্শ সতী স্বর্গীয়া বড় মহারাণী।
১০৯

পাঁচটী পুত্র ও একটীমাত্র কন্যা দিয়াছেন। শোক তাপ আমি কিছুই পাই নাই, দেহ ভগ্ন হইয়াছে বটে কিন্তু পূর্ণ সুখ বিধাতা নরভাগ্যে রাখেন নাই, আমি ইহাতেই অত্যন্ত সুখী।” কি সুন্দর কথা! কেমন পূর্ণ সন্তোষ!

 এই ভাগ্যবতী রমণী কাঠমুণ্ড সহরের ১৬০ ক্রোশ দূরে পাটান নামক স্থানে ১৮৬৭ খৃষ্টাব্দে ১০ই মার্চ্চ রবিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইনি অতি সদ্বংশজাত, শৈশবেই ইঁহার বিবাহ হয়।১৮৮২ খৃষ্টাব্দে ৩১শে জুলাই ইঁহার প্রথমা কন্যা বজঙ্গী মহারাণী ভূমিষ্ঠ হন। জ্যেষ্ঠ পুত্র মোহন শামসের জঙ্গ রাণ বাহাদুর ১৮৮৩ খৃষ্টাব্দে ২৬শে ডিসেম্বর শনিবার ভূমিষ্ঠ হন। তৎপরে ক্রমে তাঁহার আরও চারিটী পুত্র জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০০ খৃষ্টাব্দে কনিষ্ঠ পুত্রের জন্মের পর হইতেই তিনি নিদারুণ যক্ষারোগে শয্যাগত হন এবং প্রায় ৩ বৎসর ধীরতা এবং সহিষ্ণুতার সহিত অশেষ রোগযন্ত্রণা ভোগ করিয়া ১৯০৫ খৃষ্টাব্দে দেহ ত্যাগ করিয়াছেন। হিন্দু রমণীর জীবনে বর্ণনীয়, বিশেষঘটনা প্রায় থাকেনা; ইঁহার জীবনেও উল্লেখযোগ্য বিশেষ ঘটনা তেমন কিছু নাই। ইনি অতি ধর্ম্মপ্রাণা নিষ্ঠাবতী স্ত্রীলোক ছিলেন। রাজপতির সমভিব্যাহারে হরিদ্বার, বদরিকা, মথুরা, কুরুক্ষেত্র প্রয়াগ প্রভৃতি বহু তীর্থ ভ্রমণ করিয়াছিলেন। অনেক যাগ-যজ্ঞ, লক্ষ হোম, কোটী-হোম প্রভৃতির অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। দৈনিক জীবনে, অতি নিষ্ঠার সহিত ধর্ম্মাচরণ করিতেন। রোগ শয্যায় পড়িয়াও এক দিনের তরে তাহার ব্যতিক্রম হয় নাই। জীবনের শেষ দিন পর্য্যন্ত