কিন্তু মহারাজ তাঁহাকে যত্নপূর্ব্বক সুশিক্ষা দিয়া তাঁহার প্রকৃতি ও চরিত্রের সৌন্দর্য্য আরো ফুটাইয়া তুলিয়াছিলেন। মহারাজ তিন বৎসরকাল যেরূপ ভাবে মহারাণীর সেবা এবং চিকিৎসা করিয়াছেন তাহাতে তাঁহার পত্নীর প্রতি গভীর প্রেম সুন্দররূপে প্রকাশ পাইয়াছে। তিনি পত্নীর জন্য এই দীর্ঘকাল সকল প্রকার সুখ হইতে বঞ্চিত হইয়া নিয়ত মানসিক দুশ্চিন্তায় কালযাপন করিতেন। দুরারোগ্য ব্যাধি তাঁহার কোমল দেহকে ক্ষীণ করিতেছে দেখিয়া মহারাজ আকুল হইয়া পড়িতেন। মানবের সাধ্যে যাহা কিছু আছে পত্নীর জীবনের জন্য তাহার কিছুই অচেষ্টিত রাখেন নাই। যেদিন মহারাণীর রোগের কোনরূপ বৃদ্ধি হইত, চিকিৎসকদিগের প্রাণ ভয়ে শুকাইয়া যাইত, মহারাজ হয়ত ভাবিবেন কোন ত্রুটি, কোন অনিয়ম হইয়াছে। স্ত্রীর রোগ যন্ত্রনা ও শীর্ণ দেহলতা দেখিয়া মহারাজ শোকে কাতর হইতেন। যে প্রাণ বিশাল রাজ্যের ভার বহন করিতে পারে, যাহা বিপদে অচল অটল, তাহা পত্নীর রোগশয্যা পার্শ্বে স্থির থাকিতে পারি না।
ইঁহাদের দাম্পত্য জীবন অত্যন্ত সুখের ছিল, উভয়ের প্রতি উভয়ের গভীর প্রেম ছিল। কিন্তু বিধাতার ইচ্ছা কে প্রতিহত করিতে পারে? এই সুদৃঢ় প্রেমের বন্ধন ছিন্ন করিয়া মৃত্যু রাজভবনকে শোকে আচ্ছন্ন করিল, মহারাজের সুখের সংসার অকালে অন্ধকার হইল। মৃত্যুর তিন দিন পূর্ব্বে তাঁহাকে পশুপতিনাথে লইয়া যাওয়া হয়। সেদিন রাত্রি দশ-