বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৫০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
নেপালে বঙ্গনারী।

টার সময় মহারাজকে অনুরোধ করিয়া গৃহে পাঠাইলেন, রাত্রি ১২টার সময় তাঁহার শেষ সময় উপস্থিত হইল। ভগিনীকে পতির প্রতিকৃতি আনিতে অনুরোধ করিলেন, একবার একদৃষ্টে তাহা নিরীক্ষণ করিয়া মস্তকে ধারণ করিলেন, তারপর চক্ষু মুদ্রিত করিয়া ইষ্টদেবতাকে স্মরণ করিতে করিতে এই নশ্বর দেহ ত্যাগ করিয়া গেলেন। চিতাভস্ম বাঘমতীর জলে মিশ্রিত হইল, ধীর গম্ভীর নিনাদে কামান ধ্বনিত হইয়া এই নিদারুণ বার্ত্তা সহরবাসীকে জ্ঞাপন করিল, কত চক্ষে সেদিন বারিধারা বর্ষিত হইল কে গণনা করে?

 একটী ঘটনা বলিলে নারীগণ মহারাণীর পতিভক্তি বুঝিতে পারিবেন। মৃত্যুর পূর্ব্ব হইতেই মহারাণী পতিকে বিবাহ করিবার জন্য বার বার অনুরোধ করেন। “আপনি বিবাহ করুণ, আমি চক্ষে তাহাকে দেখিয়া যাই, আমি তাহাকে আপনার সেবার সকল ব্যবস্থা শিখাইয়া দিয়া যাই। আমি সকল বন্দোবস্ত করিয়া নিশ্চিন্ত মনে চলিয়া যাই।” শেষদিন পর্য্যন্ত তিনি বার বার পতিকে বিবাহ করিবার জন্য অনুরোধ করিয়াছিলেন। “আপনি যদি আমার জন্য শোকার্ত্ত হৃদয়ে কাল যাপন করেন, আমার আত্মা নরকগামী হইবে, আমি পরকালের সুখে বঞ্চিত হইব। ইহকালে আপনাকে অনেক কষ্ট দিলাম, মৃত্যুর পরে যেন আর কষ্ট না দিই”। এই উক্তি নারীর পক্ষে কি কঠিন, কত গভীর প্রেম হৃদয়ে থাকিলে পত্নী পতিকে এরূপ অনুরোধ করিতে পারেন? কত