পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপাল যাত্রা।

এ ত নৌকা নয়, এ দোলা। উপকথায় যে দোলার কথা.পড়িয়াছিলাম এই বুঝি সেই দোলা। কার্পেটের মাথার উপর একটা কাঠের ঢাকনা, তাহার চারিদিকে ঝালরের মত পর্দ্দা। কার্পেটের দোলায় দুলিতে দুলিতে নেপাল রাজ্যে প্রবেশ করিলাম। প্রায় এক মাইল দূরবর্ত্তী বীরগঞ্জের হাঁসপাতালে আসিয়া পৌঁছিলাম। সেই খানেই রাত্রি বাস করা গেল। পর দিন প্রাতে আহারাদি করিয়া পূনরায় কার্পেটে আরোহণ করিয়া যাত্রা করিলাম। বীরগঞ্জে আসিতে আসিতে পথে মহারাজার শীতকালের আবাস সুন্দর প্রাসাদ দেখিলাম। বীরগঞ্জ একটী ক্ষুদ্র সহর। বীরগঞ্জ ছাড়িয়া বিশাল প্রান্তরে আসিয়া পড়িলাম। আজ আমাদিগকে প্রায় দশ ক্রোশ যাইতে হইবে। প্রান্তর ছাড়িয়া দিবা শেষে এক জঙ্গলের ভিতর প্রবেশ করিলাম। শুনিলাম চারিক্রোশ ক্রমাগত এই জঙ্গলের ভিতর দিয়া আমাদের গন্তব্যস্থানে পৌঁছিতে হইবে। জঙ্গলের ভিতর এক এক ক্রোশ অন্তর একটী জলের কল আছে। ভূতপূর্ব্ব রাজমন্ত্রী মহারাজ দেবশামসের স্বর্গীয়া পত্নী দেবী কর্ম্মকুমারীর স্মরণার্থ এই সকল জলধারা নির্মাণ করিয়াছেন। প্রত্যেক জলধারার উপর দেবনাগরী অক্ষরে সেই স্বর্গবাসিনীর নাম লিখিত আছে। ক্লান্ত পথিক দুই হস্তে অমৃতশীতল জলধারা পান করে, আর মনে মনে সেই সাধ্বীকে সহস্র আশীর্ব্বাদ করিয়া থাকে। আমাদের বাহকগণও এখানে জলপান করিয়া শীতল হইল। জনমানবহীন শ্বাপদসঙ্কুল জঙ্গলের ভিতর, রজনী সমাগত হইল। সঙ্গে