বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
নেপালে বঙ্গনারী।

কার্য্য করিতে করিতে ক্ষুধা পাইলেই শুষ্ক চিড়া বা অন্য কিছু জলযোগ করে। দিবাশেষে পুনরায় অন্নগ্রহণ করে। অনেক দরিদ্র লোকের দুইবেলা অন্ন জোটেনা। কিন্তু সহজলভ্য ফল মূল দ্বারা উদরজ্বালা নিবারণ করে।

 প্রার্ব্বত্য প্রদেশ হইলে কি হয় এদেশের মৃত্তিকায় ফল শস্য প্রচুর জন্মে। ভারতবর্ষের কুত্রাপি এত প্রচুর এবং সুলভ ফল শস্য জন্মে কি না সন্দেহ। নেপালে শীত এবং গ্রীষ্মপ্রধান দেশের ফল ও শস্যের একত্র সমাবেশ দেখিতে পাওয়া যায়। এদেশের নরনারী উপবাস ক্লেশ সহ্য করিতে পারে না। বৎসরের মধ্যে এক দিন (তীজব্রতে নেপালী রমণীর নীরাম্বু উপবাস করিবার ব্যবস্থা আছে। সেই দিন তাহাদিগের নিকট এক বিষম দিন—সেই এক দিনের অনশন তাহাদিগের নিকট বিষম বলিয়া মনে হয়। বঙ্গদেশের বিধবাদিগকে দেখিলে না জানি তাহাদিগের কি বিস্ময়ের উদয় হয়। নেপালের জনসাধারণ অত্যন্ত মাংসাহার প্রিয়, তাহাদিগের নিকট ইহা অপেক্ষা ঈপ্সিত আহার্য্য আর কিছু নাই। ভারতবাসীর অলীক সভ্যতা, অভাব, দারিদ্র, উপবাস, ইহাদিগের নিকট অজ্ঞাত। নেপালের প্রজাবর্গ দরিদ্র বটে, কিন্তু ইহারা অর্থহীন দরিদ্র; নিরন্ন, অনাহারক্লিষ্ট, করভারে প্রপীড়িত, জীর্ণ দেহ, মনুষ্যকঙ্কাল নহে। ইহারা দৃঢ় বলিষ্ট, কর্ম্মঠ ও প্রসন্নমূর্ত্তি। তবে অত্যন্ত অপরিষ্কার থাকে বলিয়া ইহাদিগকে দেখিলে প্রীতির উদয় হয় না। গন্ধগোকুলের ন্যায় তাহারা যেখানে যায় দুর্গন্ধ বিস্তার করে। পূর্ব্বেই বলিয়াছি