পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের প্রধান তীর্থ পশুপতিনাথ।
৩৩

বোধ হয় অন্য কোন তীর্থে এরূপ স্বর্ণ রৌপ্যের প্রাচুর্য্য দেখা যায় না। যে স্থানে পশুপতিনাথের মন্দিরটী প্রতিষ্টিত আছে, বস্তুতঃ তাহা অতি রমণীয়। পশুপতিনাথের মন্দিরের নিকটে বহুদূর পর্য্যন্ত বাঘমতি নদীর উভয় পার্শ্বে প্রস্তর নির্ম্মিত কত সোপান কত ঘাট,—গৌরী ঘাট, আর্য্য ঘাট, প্রভৃতি! পশুপতির ঘাটে দাঁড়াইয়া দেখিলে বাঘমতির দৃশ্য কি সুন্দর! উভয় পার্শ্বস্থিত উন্নত পর্ব্বতের মধ্য দিয়া যেন কোন অদৃশ্য লোক হইতে আঁকিয়া বাঁকিয়া পুণ্যতোয়া নির্ঝরিণী কুল কুল করিয়া নামিয়া আসিতেছে। যেন ব্রহ্মার পাদপদ্ম হইতে মন্দাকিণী নামিয়া আসিতেছে। অন্য সময় এই অপরিসর পার্ব্বত্য নদীর জল অতি অল্প থাকে কিন্তু বর্ষায় তাহার কি খরস্রোত! কি কল্লোল! আর্য্যঘাটের পুলের উপর দাঁড়াইয়া, বাঘমতির খরস্রোত ও কল্লোল দর্শন করিলে প্রাণ এরূপ উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠে, যে সেই খরস্রোতের মুখে লম্ফ দিয়া পড়িয়া ভাসিয়া যাইতে ইচ্ছা করে। বাঘমতির এই নৃত্যময়ী লীলা দেখিয়া নয়ন পরিতৃপ্ত হয় না; এবং কল্লোলিনীর কল্লোল শুনিয়া শুনিয়া কর্ণ যেন আর তৃপ্ত হয় না। নেপালীদিগের নিকট পশুপতিনাথ অতি পবিত্র স্থান। মৃত্যুর সময়ে সকলে পশুপতি নাথের চরণ পাইবার জন্য ব্যাকুল হয়। আবালবৃদ্ধবণিতা সকলকে মৃত্যুর পূর্বে পশুপতিনাথে লইয়া যাওয়া হয়। পশুপতির ঘাটে দুইখানি প্রশস্ত শিলা এরূপ ভাবে নিহিত আছে যে তাহার উপর কাহাকেও শয়ন করাইলে পদদ্বয় বাঘমতির বারি স্পর্শ করে। এই শিলা-দুখানির একখানি রাজ পরিবার সকলের জন্য, অপরখানি মন্ত্রীর পরিবারের